Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
প্রচার দায়সারা, ব্যতিক্রম বৈদ্যবাটী

প্লাস্টিক ব্যাগের রমরমা হুগলিতে

ফলে ফের রমরমা প্লাস্টিকের পাতলা ক্যারিব্যাগের। জেলার অন্যান্য শহরও এই সমস্যায় জেরবার। এর বিরুদ্ধে দায়সারা কর্মসূচি নিয়েই ক্ষান্ত পুরসভাগুলি। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

কয়েক বছর আগে উত্তরপাড়া পুর-এলাকায় প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এ জন্য শহর জুড়ে হোর্ডিং লাগানো, লিফলেট বিলি, মিটিং-মিছিল, পথনাটিকা— সবই হয়েছে পুরসভার উদ্যোগে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি দোকান-বাজারে লাগাতার হানাও দিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু সেই নজরদারি এখন উধাও। ফলে ফের রমরমা প্লাস্টিকের পাতলা ক্যারিব্যাগের। জেলার অন্যান্য শহরও এই সমস্যায় জেরবার। এর বিরুদ্ধে দায়সারা কর্মসূচি নিয়েই ক্ষান্ত পুরসভাগুলি।

ব্যতিক্রম বৈদ্যবাটী পুরসভা। গত দেড় বছর ধরে তারা লাগাতার প্রচার চালিয়ে, জরিমানা আদায় করে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগকে বোতলবন্দি করে ফেলতে পেরেছেন। কিন্তু সর্বত্র তা হয়নি। তার প্রভাব যেমন পরিবেশের উপরে পড়ছে, তেমনি নিকাশির সমস্যা বাড়াচ্ছে। চন্দননগর, চুঁচুড়া, শ্রীরামপুরের মতো শহরে এ হেন পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা। কিন্তু পুরসভার হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। তবে সমস্ত পুরসভাই দাবি করেছে, প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের রমরমা অনেক কমেছে।

শ্রীরামপুরে কিছু দিন আগে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জন নিয়ে সভা করা হয় পুরসভার তরফে। মাইক-প্রচারও হয়। এর ফলে বহু ব্যবসায়ী সতর্ক হয়েছিলেন। মাছ-মাংস, মিষ্টির দোকানে অপেক্ষাকৃত পুরু ক্যারিব্যাগ অথবা কাগজের ব্যাগ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু নামমাত্র প্রচারে আগের পরিস্থিতি ফিরে আসতে সময় লাগেনি। শহরের এক মাছ ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘পুরসভার ঘোষণায় আমরা কাপড়ের ব্যাগে মাছ দিচ্ছিলাম। কিন্তু নজরদারি না থাকায় ফের ওই ক্যারিব্যাগ চলছে।’’

পুরসভার সাফাই বিভাগের চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল গৌরমোহন দে’র সাফাই, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। জরিমানার উপরে জোর দিতে হবে।’’ সমস্যার কথা মেনে উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘টানা নজরদারি চলেনি বলেই আগের অবস্থা অনেকটা ফিরে এসেছে। তবে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকব না। ফের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে অভিযান শুরু করব।’’

চুঁচুড়া, চন্দননগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের রমরমা চোখে পড়েছে। একই অবস্থা কোন্নগর, তারকেশ্বর, ডানকুনি, বাঁশবেড়িয়াতেও। চন্দননগরের পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। পুরসভার তরফে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের চটের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী লুকিয়ে ফের ওই ক্যারিব্যাগেই ফিরেছেন। এ বার লাগাতার অভিযান শুরু করব।’’ একই বক্তব্য হুগলি-চুঁচুড়ার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়েরও।

পুরসভার তরফে মাঝেমধ্যে নোটিস, মাইক-প্রচার হলেও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের হাত থেকে নিষ্কৃতি পায়নি আরামবাগ শহরও। ব্যবসায়ীদের একাংশের বক্তব্য, পুরসভার নজরদারির অভাবেই এই অবস্থা। এক বছর আগে প্লাস্টিকের পাতলা ব্যাগ ব্যবহারকারীদের জরিমানার নিদান দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। পুরসভার তত্ত্বাবধানে আয়োজিত উৎসবের স্টলেই ক্যারিব্যাগ ব্যবহার হয়েছে। পুরপ্রধান স্বপন নন্দীর দাবি, “ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে আমরা প্রচার চালাই। এ বার পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আরামবাগ উৎসবে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এতদিন জরিমানার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এ বার তাও কার্যকরী করা হবে।’’

আশ্বাস কবে কার্যকর হয়, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Plastic Bags Hoogly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE