Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
NEET

লকডাউন প্রত্যাহারে বিশেষ লাভ হল না, বলছেন বহু পরীক্ষার্থী

মন খবরও এসেছে যে, পরীক্ষার আগে পরপর দু’দিন লকডাউন থাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছাকাছি কোথাও থাকবেন বলে বৃহস্পতিবার সকালেই বাড়ি ছেড়েছিলেন অনেকেই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:২৪
Share: Save:

‘নিট’ পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে আজ, শনিবার লকডাউন প্রত্যাহার করে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অনেক পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের পরিবারের দাবি, সরকারের এই সিদ্ধান্তে তেমন কোনও লাভ তাঁদের হয়নি। আগামিকাল, রবিবার ‘নিট’ পরীক্ষা। শনিবার লকডাউন হবে জেনে অনেকেই আগেভাগে গাড়ি ভাড়া করে রেখেছিলেন। পথে ভোগান্তির আশঙ্কায় তাঁরা ভাড়া বাতিল করার ঝুঁকি নিতে চাননি। আবার এমন খবরও এসেছে যে, পরীক্ষার আগে পরপর দু’দিন লকডাউন থাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছাকাছি কোথাও থাকবেন বলে বৃহস্পতিবার সকালেই বাড়ি ছেড়েছিলেন অনেকেই।

মেয়েকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাবেন বলে কর্মস্থল কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরেছেন খানাকুলের নতিবপুরের বাসিন্দা সুকুমার জানা। তাঁর মেয়ে শিউলির ‘সিট’ পড়েছে বারাসত কদমগাছি আদিত্য আকাডেমিতে। পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে সাড়ে তিন হাজার টাকা গিয়ে গাড়ি ভাড়া করেছেন সুকুমারবাবু। তাঁর কথায়, “পরীক্ষার আগের দিন লকডাউন হবে জেনে আগেই গাড়ি ভাড়া করেছিলাম। পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হয়রানি হতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই গাড়ি ভাড়া করেছি।’’ সঙ্গে যোগ করেন: ‘‘পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে বাড়ির ধারে কাছে কোথাও পরীক্ষাকেন্দ্র করা গেলে ভাল হত। লকডাউন প্রত্যাহারের ঘোষণা আগে হলে অন্য কিছু ভাবা যেত।” শিউলি বলেন, “বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। তাই গাড়ি বাতিলের ঝুঁকি নিইনি।’’ শিউলি জানান, এ বার তাঁদের স্কুল থেকে পাঁচ জন নিট পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রত্যেকের কেন্দ্র আলাদা-আলাদা জায়গায়। তাই সকলেই গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষা দিতে যাবেন। তিনি বলেন, ‘‘এক জায়গাতে সেন্টার পড়লেও একটি গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া যেত। ভাড়া সকলে ভাগ করে নিতাম।” খানাকুলের প্রত্যন্ত গ্রাম পিলখাঁর মানস খামরুইয়ের সিট পড়েছে মুকুন্দপুরে ই এম বাইপাসের ধারে একটি কেন্দ্রে। বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের দূরত্ব ৯৮ কিলোমিটার। আরামবাগের বড়ডোঙ্গল রমানাথ ইনস্টিটিউশন থেকে গত বছর ৪৮৪ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন মানস। গতবার ‘নিট’ পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পাননি। তাঁর বাবা প্রভাসবাবু এক জন প্রান্তিক চাষি। তিনি বলেন, “ছেলে নিট পাশ করে চিকিৎসক হতে চায়। ও যাতে পরীক্ষা দিতে যেতে পারে, তার জন্য তিন হাজার টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করেছি। আরামবাগ মহকুমার মধ্যে কোনও জায়গায় পরীক্ষাকেন্দ্র হলে সকলেরই ভাল হত।” মানসের কথায়, “পরীক্ষার আগের দিন লকডাউন হবে জেনে গাড়ি ভাড়া করেছিলাম। লকডাউন প্রত্যাহারের ঘোষণা অনেক দেরিতে হয়েছে। এখন আর ভাড়া বাতিলের সুযোগ নেই।” নতিবপুর ভূদেব হাইস্কুলের টিচার ইনচার্জ মানস সামন্ত বলেন, “লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে, এটা খুব ভাল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আরও আগে ঘোষণা করে পরিবহণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা গেলে অভিভাবকদের এত টাকা খরচ হত না।”

গোঘাটের নকুন্ডা গ্রামের পিম্পা রায়ের সিট পড়েছে হুগলির রাজহাট সংলগ্ন বড়াল মালিমপুর এলাকার একটি কেন্দ্রে। নকুন্ডা থেকে দূরত্ব ৯৫ কিমি। পিম্পার বাবা দেবকুমার রায় বলেন, “৩,৩০০ টাকায় গাড়ি ভাড়া করেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NEET Examination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE