প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েই ছিল। এ বার শুধু তা চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষা।
হুগলিতে জেতা পুরসভাগুলির কে কোনটির চেয়ারম্যান অথবা ভাইস চেয়ারম্যান হবেন, ভোটের ফল বের হওয়ার পরেই তার প্রাথমিক বাছাই হয়ে গিয়েছিল। এ বার তা থেকে চূড়ান্ত করার দায়িত্ব বর্তাল তৃণমূলের তিন রাজ্য নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি ও ফিরহাদ (ববি) হাকিমের উপর।
বুধবার কলকাতার নজরুল মঞ্চে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। জেলার ১৩টি পুরসভার মধ্যে বাঁশবেড়িয়া নিয়ে ভোটের আগে থেকেই বির্তক চরমে ওঠে। তার উপর পুরসভা হাতে এলেও খোদ বিদায়ী চেয়ারম্যানই সেখানে হেরেছেন। এই অবস্থায় পুরসভার চেয়ারম্যান ঠিক করার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের সভায় সে কথাও জানিয়েছেন দলের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, জেলার দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রত্না দে নাগ বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যানের খসড়া তালিকা তৈরি করেছেনে। সেই গোপন তালিকা বিচার করেই রাজ্য নেতারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আপাতত তারই কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে।
বস্তুত, এ বার পুর নির্বাচনের প্রচারপর্বে বাঁশবেড়িয়ায় গত বারের পুরপ্রধান রথীন্দ্রনাথ দাস মোদক দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছিলেন। তখন থেকেই সেখানে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি তেতে ওঠে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে পুলিশ পাহারায় প্রচার করতে হয় রথীনবাবুকে। ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় দল। কিন্তু তার পরেও পুরভোটে হার হয়েছে রথীন্দ্রনাথবাবুর। আর সেই কারণেই সেখানে নতুন চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। সেই ‘টাগ-অব-ওয়ারে’ সামিল বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর।
গত বারের উপ-পুরপ্রধান অমিত ঘোষ এ বারও জিতেছেন। তাঁর পাশাপাশি কয়েক জন মহিলা কাউন্সিলরের নামও পুরপ্রধান হিসেবে উঠে এসেছে। ২২টি ওয়ার্ডের এই পুরসভায় ১৭টি আসন পেয়েছে শাসক দল। ৮ জন মহিলা জিতেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জন আগের বারেও কাউন্সিলর ছিলেন। স্বভাবতই অভিজ্ঞতার মাপকাঠিতে তাঁদের নামও হাওয়ায় ভাসছে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একটি অংশ চাইছে, পুরসভার কাজে অভিজ্ঞতা আছে, এমন কারও হাতেই পুরপ্রধানের দায়িত্ব সঁপে দিতে। কিন্তু একাধিক নাম উঠে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
তবে পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে দলের মধ্যে জলঘোলা হওয়ার আশঙ্কা করছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। আর সেই কারণেই এই পুরসভার চেয়ারম্যান সরাসরি নিজেই ঠিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা, দলীয় সূত্রে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। এখন দলনেত্রীর বিবেচনায় কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে় সেটাই দেখার।
ভদ্রেশ্বর পুরসভায় এ বার শাসক এবং বাকি বিরোধী-সহ অন্যান্যরা সমান সংখ্যক আসন পেয়েছেন। ওই পুরবোর্ড কার হাতে যাবে তা নিয়েও জল্পনা চলছে। তবে শাসকদলের একটি সূত্রের দাবি, ওই পুরসভায় বোর্ড গড়তে তাঁদের কোনও সমস্যা হবে না। কেন না জয়ী একমাত্র নির্দল সদস্য ইতিমধ্যেই তাঁদের সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন।
অন্য পুরসভার মধ্যে বৈদ্যবাটিতেও পুরপ্রধানের নির্বাচন নিয়ে নানা সমীকরণ চলছে শাসক দলের অন্দরে। এখানেও বিদায়ী পুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ হেরে যাওয়ায় পুরপ্রধান পদের একাধিক দাবিদার ভেসে উঠেছে। তৃণমূল শিবিরের খবর, প্রথম বার কাউন্সিলর হয়েই সুবীর ঘোষ নামে দলের এক নেতা দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বিদায়ী পুরবোর্ডের তিন সদস্যের নামও শোনা যাচ্ছে।
শ্রীরামপুরে বিদায়ী পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় এ বারও জিতলেও পুরপ্রধান পদে তাঁর পরিবর্তে অন্য এক বর্ষীয়ান নেতার নাম ভাসতে শুরু করেছে। তবে অমিয়বাবুই দৌড়ে এগিয়ে বলে শাসকদলের একাংশ জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy