Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
কাউন্সিলরের দোকানে হামলার জের

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব গড়াল বন্‌ধে

পেরিয়ে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি। কিন্তু শনিবার রাত পর্যন্ত কোন্নগরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা শাসকদলের বর্তমান কাউন্সিলর স্বপন দাসের দোকানে হামলায় কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। হামলায় পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানের দলবল জড়িত বলে অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোন্নগর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

পেরিয়ে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি। কিন্তু শনিবার রাত পর্যন্ত কোন্নগরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা শাসকদলের বর্তমান কাউন্সিলর স্বপন দাসের দোকানে হামলায় কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। হামলায় পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানের দলবল জড়িত বলে অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে। হামলার প্রতিবাদে আজ, রবিবার কোন্নগরের দু’টি ব্যবসায়ী সংগঠন ২৪ ঘণ্টা ব্যবসা বন্‌ধের ডাক দেওয়ায় অনেকেরই ক্ষোভ, ‘‘এমন দিনও দেখতে হচ্ছে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে শহরে গোটা দিনের ব্যবসা লাটে!’’

কোন্নগর ব্যবসায়ী সমিতির কার্যকরী সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। এর প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমরা রাজনীতি বুঝি না। এমন ঘটনা ঘটবে কেন? এমন আতঙ্ক নিয়ে ব্যবসা করা যায়!’’

পুলিশ জানায়, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরেই ওই হামলা। হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। শনিবার সকালে বিধায়ক প্রবীর ঘোষালকে এলাকায় পেয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ উগরে দেন। পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ দাবি করা হয়। প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘এই ধরনের জঘন্য ঘটনা ঘটিয়ে অপরাধীরা সরকারের নামও কালিমালিপ্ত করতে চায়। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে বলেছি পুলিশকে।’’ দলের কেউ হামলায় যুক্ত কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও বিধায়ক জানান।

শুক্রবার রাতে রেলস্টেশনের পাশে নিজের পোশাকের দোকানে বসেছিলেন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্ষীয়ান কাউন্সিলর স্বপনবাবু। জনাপাঁচেক দুষ্কৃতী সেখানে হানা দেয়। রড দিয়ে দোকানে ভাঙচুর করে তারা। ক্যাশবাক্স থেকে কয়েক হাজার টাকা লুঠ হয়। স্বপনবাবুও প্রহৃত হন। রাতেই দলীয় পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্যবাবু এবং উপ-পুরপ্রধান গৌতম দাসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও হয়েছে।

কেন বাপ্পাদিত্যবাবু, গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল? স্বপনবাবুর অভিযোগ, গরিবদের বাড়ি তৈরির প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে পুরসভায়। শুক্রবার তিনি পুরসভায় এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তখনই পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধান তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তার জেরেই ওই হামলা। পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘গরমিলের বিষয়টি সামনে আসতে দুই পুরকর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছে। স্বপনবাবুর দোকানে হামলার ব্যাপারে কিছু জানি না। কেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে‌ন, স্বপনবাবুই জানেন।’’ প্রায় একই সুরে গৌতমবাবু দাবি করেন, ‘‘ক্ষমতা দখলের স্বার্থে স্বপনবাবু মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’

তবে ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, জনবহুল এলাকায় এ ভাবে দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়ালে তাঁদের নিরাপত্তা কোথায়? বস্তুত, কোন্নগরে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য নতুন নয়। এক সময় হুব্বা শ্যামল দাপিয়ে বেড়িয়েছে। তার পরে দখল যায় আর এক দুষ্কৃতী রমেশ মাহাতোর হাতে। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে শাসকের অনেক নেতার যোগাযোগের অভিযোগও নতুন নয়। ফের নেতা দুষ্কৃতী যোগের শোনা যাচ্ছে শহরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Konnagar Business Strike TMC Group Clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE