Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পঞ্চায়েতে পদের দাবি নিয়ে উত্তেজনা

তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতি, রক্তাক্ত বাতানল

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতেই আরামবাগের বাতানলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতি শুরু হয়। জখম হন স্থানীয় চকহাজি গ্রামের এক মহিলা-সহ ২ জন। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩০
Share: Save:

কোথাও বিরোধী প্রার্থী ছিল না। তাও পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হতেই প্রার্থী পদের দাবি নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে রক্তাক্ত হয়েছিল আরামবাগ মহকুমার ৬৩টি পঞ্চায়েত এলাকা। এ বার প্রধান, উপপ্রধান এবং সঞ্চালক পদের দাবি নিয়ে তেতে উঠছে অধিকাংশ পঞ্চায়েত। আর তার জেরে আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতেই আরামবাগের বাতানলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতি শুরু হয়। জখম হন স্থানীয় চকহাজি গ্রামের এক মহিলা-সহ ২ জন। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।

তবে অশান্তি শুধু বাতানলেই নয়, কম-বেশি মহকুমার ৬৩টি পঞ্চায়েত এলাকাতেই। তিরোলের কড়ুই গ্রামেও গত দু’মাস ধরে চলছে বোমাবাজি। উত্তপ্ত মায়াপুর-২, সালেপুর-২-সহ খানাকুল, গোঘাট এবং পুরশুড়ার বেশ কয়েকটি ব্লক।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের সংশ্লিষ্ট পদগুলির দাবিদার কমপক্ষে ২ থেকে ৪জন। নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার সময় গোষ্ঠী কোন্দল সামলাতে অধিকাংশ এলাকায় আসন ভাগাভাগি করে দেন উপরের নেতৃত্ব। যেমন, গোঘাটের কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েতে ১১টি আসনের মধ্যে ৫টি দেওয়া হয় চঞ্চল রায় গোষ্ঠীকে , অন্য ৫ টি মোহন মণ্ডলকে, বাকি ১টি শেখ মোজাম্মেলকে। এভাবেই শ্যামবাজার পঞ্চায়েতের ১২টি আসন সমান ভাগ করে দেওয়া হয়েছে দুই অঞ্চল নেতা সাহাবুদ্দিন এবং অরুণ পালের মধ্যে। মহকুমার ৬৩টি পঞ্চায়েতের যেগুলিতে এমন ভাগ হয়নি, সেখানে বিক্ষুব্ধরা প্রার্থী দিয়েছেন। যেমন, পুরশুড়ার ডিহিবাতপুরে পঞ্চায়েতে ১৯টি আসনে ভাগাভাগি না হওয়ায় নির্দল ৯টি আসনে জয়ী হয়েছে।

আর দলের এই দ্বন্দ্ব মেটাতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্বের। এ দিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা পঞ্চায়েতগুলির বোর্ড গঠনের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। হুগলির ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে জেলাশাসক সুনির্দিষ্ট দিন ধার্য করে দেবেন। ২০১০ সালের পঞ্চায়েত আইন অনুসারে পঞ্চায়েতের প্রথম সভার যত সম্ভব আগে দলনেতার নাম ব্লক প্রশাসনের কাছে জানানোর কথা। কিন্তু আরামবাগ মহকুমার ব্লক প্রশাসনের কাছে কোন পঞ্চায়েতেরই দলনেতার নাম এখনও পর্যন্ত আসেনি।

আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার কথায়, ‘‘অশান্তি হলে পুলিশকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন পদ নিয়ে জেলা নেতৃত্বই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” পদের দাবি নিয়ে সমস্যার কথা স্বীকার করে হুগলি জেলা তৃনমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দলনেত্রীর নির্দেশে যোগ্য এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কাউকে প্রধান করা হবে। কোথাও কাউকেই প্রধান হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হলে দল তা
মানবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE