Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ট্রেন থামিয়ে ছাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন চালক

শুধু তাই নয়, বুধবার রাতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কুলগাছিয়া স্টেশনের কাছে ওই ঘটনার পরে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে একা ফেলে যাননি চালক। আরপিএফ ডেকে ছাত্রীকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে তবে ফের ট্রেন নিয়ে যাত্রা করেন।

রক্ষক: ট্রেন চালক অশোক সিকদার। নিজস্ব চিত্র

রক্ষক: ট্রেন চালক অশোক সিকদার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ১২:৫০
Share: Save:

ট্রেনের আপৎকালীন (ইমার্জেন্সি) ব্রেক কষে আত্মঘাতী হতে ইচ্ছুক এক নাবালিকার প্রাণ বাঁচালেন চালক।

শুধু তাই নয়, বুধবার রাতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কুলগাছিয়া স্টেশনের কাছে ওই ঘটনার পরে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে একা ফেলে যাননি চালক। আরপিএফ ডেকে ছাত্রীকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে তবে ফের ট্রেন নিয়ে যাত্রা করেন।

পুলিশ ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চালকের নাম অশোক সিকদার। তিনি খড়্গপুর ডিভিশনের সিনিয়র মোটরম্যান। বুধবার রাতে তিনি হাওড়াগামী ডাউন মেদিনীপুর লোকাল চালাচ্ছিলেন। ৮টা নাগাদ ট্রেনটি কুলগাছিয়া স্টেশন ছেড়ে বীরশিবপুরের দিকে রওনা দেয়। গতি কিছুটা বাড়াতেই অশোকবাবু দেখতে পান, লাইনের উপর কেউ নড়াচড়া করছে। তিনি আপৎকালীন ব্রেক কষেন। ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়।

আচমকা ট্রেন থামতে দেখে বছর তেরোর ছাত্রীটি উঠে দাঁড়ায়। অশোকবাবু ট্রেন থেকে নেমে ছাত্রীটির কাছে যান। ছাত্রীটি তাঁর কাছে ট্রেন থামানোর কারণ জানতে চেয়ে বলে, সে আত্মহত্যা করতে চায়। ফের ট্রেন চালানোর জন্য অশোকবাবুকে অনুরোধও করে। বেগতিক দেখে অশোকবাবু ট্রেন থেকে দুই যাত্রীকে নামিয়ে আনেন। সকলে মিলে ছাত্রীটিকে বোঝান। তাতেও সে রাজি না হওয়ায় অশোকবাবু গার্ডকে ডেকে উলুবেড়িয়া আরপিএফে খবর দেন। অন্য একটি আপ ট্রেনে করে আরপিএফ ঘটনাস্থলে গেলে চালক তাদের হাতে ছাত্রীটিকে তুলে দেন। পরে আরপিএফ ছাত্রীটিকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

রেল পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রীটির বাড়ি উলুবেড়িয়ার বাণীবন জগদীশপুরে। সে জানিয়েছে, বছরখানেক আগে তার মাকে তাড়িয়ে দেন বাবা। তারপর থেকে বাবা তাকে নানা কারণে মারধর করতেন। বাবার অত্যাচারে মাসখানেক আগে বাড়ি ছেড়ে সে কুলগাছিয়ায় মাসির চলে আসে। কিন্তু সেখানেও অত্যাচার হওয়ায় সে এ দিন আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ছাত্রীটির এ সব কথা খতিয়ে দেখতে রেল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রেল পুলিশের পক্ষ থেকে ছাত্রীটিকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

যে ভাবে অশোকবাবু ছাত্রীটির প্রাণ বাঁচিয়েছেন, তাতে গর্বিত দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘অশোকবাবু অনেক বড় মাপের কাজ করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE