Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

তোলাবাজির প্রতিবাদ, মার দুই তৃণমূল নেতাকে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘সব্জি বাজারে’ প্রতিদিন প্রায় ৯০০ ব্যবসায়ী বসেন। এলাকার একদল দুষ্কৃতী দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের থেকে তোলা আদায় করছিল বলে অভিযোগ। আনাজ বিক্রি করতে গেলে তাদের কাছে রোজ জমা রাখতে হত ১০০ টাকা। সম্প্রতি দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় তোলাবাজির প্রতিবাদ করেন হাওড়া ‘সব্জি বাজার’ খুচরো বিক্রেতা কল্যাণ সমিতির সম্পাদক কৃষ্ণ সিংহ।

তৃণমূলের ওয়ার্ড অফিসে ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের ওয়ার্ড অফিসে ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:১১
Share: Save:

হাওড়ার ‘সব্জি বাজারে’র ব্যবসায়ীদের থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ আগেও উঠেছে। এ বার তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন খোদ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক। তাঁকে বাজারের মধ্যেই ফেলে পেটানো হল। ভাঙচুর চালানো হল তৃণমূলের ওয়ার্ড অফিসে। মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি দলের ওয়ার্ড সভাপতিও। গত শনি ও রবিবার, পরপর দু’দিন এমনই ঘটেছে হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন ডবসন রোড ও ‘সব্জি বাজারে’। দু’টি ঘটনাতেই অভিযোগের তির স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলরের স্বামী সন্তোষ সহানির বিরুদ্ধে। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘সব্জি বাজারে’ প্রতিদিন প্রায় ৯০০ ব্যবসায়ী বসেন। এলাকার একদল দুষ্কৃতী দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের থেকে তোলা আদায় করছিল বলে অভিযোগ। আনাজ বিক্রি করতে গেলে তাদের কাছে রোজ জমা রাখতে হত ১০০ টাকা। সম্প্রতি দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় তোলাবাজির প্রতিবাদ করেন হাওড়া ‘সব্জি বাজার’ খুচরো বিক্রেতা কল্যাণ সমিতির সম্পাদক কৃষ্ণ সিংহ। অভিযোগ, এর পরেই গত শনিবার সন্তোষের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী কৃষ্ণবাবুকে বাজারের মধ্যে ফেলে পেটায়। খবর পেয়ে বাকি বিক্রেতারা ছুটে এলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। কৃষ্ণবাবু পরে সন্তোষ-সহ তিন জনের নামে গোলাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ আক্রমণকারীদের মধ্যে এক জনকে আটকও করে। কিন্তু অভিযোগ, থানায় দু’ঘণ্টা বসিয়ে রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

হামলা এখানেই শেষ হয়নি। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাত ৯টা নাগাদ। ডবসন রোডে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড অফিসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বসে ছিলেন ওয়ার্ড সভাপতি রাজেশ সোনকর। আচমকাই ৪০-৫০ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী তাঁর উপরে চড়াও হয়। ভাঙচুর চালানো হয় ওয়ার্ড অফিসে। বাধা দিতে এসে আক্রান্ত হন রাজেশের সঙ্গীরা।

তাঁদের বেধড়ক মারধর করে পালিয়ে যায় আক্রমণকারীরা।

রাজেশের অভিযোগ, ‘‘সন্তোষই দলবল নিয়ে এসে এই হামলা চালিয়েছে। শনিবারের ঘটনার প্রতিবাদ করাতেই ওরা আমাদের আক্রমণ করে।’’ ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘এই অভিযোগ আমিও পেয়েছি। উত্তর হাওড়ায় দলের নেতাদের ঘটনাটি সবিস্তার জানতে বলেছি।’’

যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে সন্তোষের দাবি, কয়েক বছর ধরে তিনি সব্জি বাজারে ঢোকেন না। তাই শনিবার তাঁর ঘটনাস্থলে থাকার অভিযোগ মিথ্যা। তিনি বলেন, ‘‘মারধর বা ভাঙচুরের যে সব অভিযোগ উঠছে, সব সাজানো। আমি তো সব্জি বাজারে গত কয়েক বছর ঢুকিনি। আর ওঁরা ওয়ার্ড অফিসে ভাঙচুরের কথা বলছেন, সেটা তো ওঁরা নিজেরাই করেছেন।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরো ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Howrah তৃণমূল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE