Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জল-যন্ত্রণায় দায়ী চুরি, অভিযোগ

পঞ্চায়েত প্রধান অভিজিতবাবু জানান, দু’বছর আগে পঞ্চায়েত সমিতির হাত থেকে ওই জল সরবরাহের দায়িত্ব পঞ্চায়েতের হাতে আসে। তখন প্রায় সাতশো বাড়িতে সংযোগ ছিল।

গোপনে: জানলায় বসানো ছোট পাম্প। নিজস্ব চিত্র

গোপনে: জানলায় বসানো ছোট পাম্প। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৫
Share: Save:

যাঁরা পঞ্চায়েতে টাকা জমা দিয়ে বৈধ উপায়ে সংযোগ নিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে জল পড়ে ‘সরু সুতো’র মতো। আর যাঁরা রাস্তার পাইপ থেকে চুরি করছেন, তাঁদের ঘরে জলের অভাব নেই। হুগলির পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের নানা জায়গায় এমনই অভিযোগ উঠছে।

গরম পরতেই পান্ডুয়া পঞ্চায়েত জুড়ে ‘জল-যন্ত্রণা’ শুরু হয়েছে। পরিষেবা পেতে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘জল-চুরি’ রুখলে পরিস্থিতির কিছুটা সুরাহা হতে পারে। সমস্যার কথা মানছেন পঞ্চায়েতের কর্তারাও। পঞ্চায়েত প্রধান অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘অনেক বাড়িতে রাস্তার পাইপ লাইনে টুলু পাম্প লাগিয়ে জল নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই কাজ হলেই বেআইনি সংযোগ কেটে দেওয়া হবে। পাম্প বাজেয়াপ্ত করা হবে।’’

নাক্‌সি মহল্লা, স্টেশন রোড, কাজি মহল্লা, সাতঘড়িয়া, খরাজিপাড়া, বেনেপাড়া, বালিহাট্টা-সহ নানা জায়গায় পঞ্চায়েতের ট্যাপকলে পর্যাপ্ত জল আসছে না বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীরা জানান, সকাল, দুপুর, বিকেলে প্রায় দেড়ঘন্টা করে জল মিললেও তাতে প্রয়োজন মিটছে না। দিঘিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা এক মহিলার কথায়, ‘‘একটা বালতি ভরতেই পনেরো-কুড়ি মিনিট লেগে যাচ্ছে। প্রয়োজন মিটবে কী করে?’’

পশ্চিম বালিহাট্টার এক প্রৌঢ়ের ক্ষোভ, ‘‘সরকারি ভাবে যে কয়েকটি সংযোগ আছে, বেআইনি সংযোগ রয়েছে তার দ্বিগুণ। অথচ সবাই সব জেনেও চুপ। সঠিক পথে যাঁরা সংযোগ নিয়েছি, তাঁরাই নির্জ‌লা!’’

অভিযোগ, অনেক বাড়িতে ছোট পাম্প বসিয়ে রাস্তা থেকে গোপনে টুলু পাম্পের সাহায্যে জল তুলে নেওয়া হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে বাড়িতে জল নিচ্ছেন এমন এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘পঞ্চায়েতের জল তো সুতোর মতো। তাই টুলু পাম্প দিয়ে রাস্তার পাইপ থেকে জল নিই।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘অল্প কিছুক্ষণ জল তুলেই পাম্প বন্ধ করে দিই। বিদ্যুতে পাম্প চলে বলে দ্রুত জল ওঠে।’’

পঞ্চায়েত প্রধান অভিজিতবাবু জানান, দু’বছর আগে পঞ্চায়েত সমিতির হাত থেকে ওই জল সরবরাহের দায়িত্ব পঞ্চায়েতের হাতে আসে। তখন প্রায় সাতশো বাড়িতে সংযোগ ছিল। পঞ্চায়েত আরও ১৪০০ বাড়িতে সংযোগ দিয়েছে।

প্রধানের দাবি, ‘‘আগে থেকেই বেশ কিছু পরিবার অসদুপায়ে জল নিত। আমরা নোটিস দিলেও সংযোগ কাটেনি। এ বার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ প্রধান জানান, জলের সঙ্কট কি ভাবে মেটানো যায়, তা নিয়ে শীঘ্রই সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Pump Water crisis pandua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE