Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পিএফের টাকা গায়েব, নালিশ

চটকল শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) অন্তত ছ’কোটি টাকা জমা পড়েনি। অভিযোগের তির উত্তর ২৪ পরগনার ওয়েভারলি জুটমিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পিএফ কমিশনার অফিস থেকে মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পুলিশের কাছে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

চটকল শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) অন্তত ছ’কোটি টাকা জমা পড়েনি। অভিযোগের তির উত্তর ২৪ পরগনার ওয়েভারলি জুটমিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। পিএফ কমিশনার অফিস থেকে মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পুলিশের কাছে।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে কারখানার মালিক সুরেশ অগ্রবাল অবশ্য বলেন, ‘‘এই অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। শ্রমিকেরা ঠিক বলছেন না।’’

পিএফ দফতরের অভিযোগ, শ্রমিকদের বেতন থেকে নিয়মমাফিক পিএফের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে দিনের পর দিন। কিন্তু টাকা জমা পড়েনি পিএফ দফতরে। এর ফলে ওই মিলের দেড় হাজার অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-সহ অন্যান্যরা পিএফের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সম্প্রতি হুগলিতে একের পর এক জুটমিল বন্ধ হয়ে অন্তত কুড়ি হাজার শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। গঙ্গার অন্য পারে জগদ্দলের জুটমিলের আবার ভিন্ন চিত্র। সেখানে মিল চালু রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে পিএফে শ্রমিকদের দেয় অংশের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে নিয়ম মাফিক। কিন্তু তা পিএফ কমিশনার অফিসে জমা করা হয়নি কখনও। তার জেরে বর্তমানে ওই মিল থেকে অবসর নেওয়া অন্তত দেড় হাজার শ্রমিক তাঁদের পিএফের টাকা পাননি। আবার কর্মরত শ্রমিকদের অনেকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পিএফ থেকে ঋণ চেয়েও পাননি।

বিষয়টি নজরে আসার পরই ওই মিলের সিটু ও আইএনটিইউসি-সহ মোট আটটি শ্রমিক গঠন চন্দননগরের শ্রমিক আইনি সহায়তা কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন। তাঁরা লিখিত ভাবে আবেদন করেন ওই কেন্দ্রে। এরপরই আইনি সহায়তা কেন্দ্রের তরফে ব্যারাকপুরের আঞ্চলিক পিএফ কমিশনারের দফতরে বিষয়টি জানানো হয়। পিএফ কমিশনারের দফতর এরপর নড়েচড়ে বসে। কেন টাকা জমা দেওয়া হল না, তা জানতে মিল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে কারণ দর্শানোর কথা বলা হয় পিএফ কমিশনারের অফিস থেকে। এরপরই জগদ্দল থানায় ওই মিলের তিন কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় পিএফ কমিশনারের তরফে। কিন্তু এরপরও শ্রমিকেরা তাঁদের বকেয়া প্রাপ্য টাকা কিন্তু পাননি।

ওয়েভারলি মিলের পাট বিভাগে কাজ করেন আইএনটিইউসি নেতা কামেশ্বর রায়। তিনি বলেন, ‘‘মিল মালিক সমেত তিন কর্তার বিরুদ্ধে পিএফ কমিশনার অফিস থেকে অভিযোগ দায়ের করা হল থানায়। এরপর মালিকপক্ষ টাকা দিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু শ্রমিকদের কেটে নেওয়া টাকা ওঁরা জমা দিলেন না। আমরা এ বার ভাবছি, শ্রমিকদের টাকা আদায়ে আদালতে যাব মিল মালিকদের বিরুদ্ধে।’’

ওই মিলের শ্রমিকদের নায্য পাওনার দাবিতে লড়াই করেছে চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মিল মালিকেরা শ্রমিকদের টাকা কেটে নিল। অথচ দিচ্ছে না বকেয়া টাকা। পিএফ কমিশনার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে আমরা বিষয়টি ছাড়ব না। শ্রমিকদের টাকা আদায়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Weaverly Jute Mills Provident Fund Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE