প্রতীকী ছবি।
সরকারি ঘোষণামতো সোমবার হুগলিতে অতিরিক্ত সরকারি বাস পথে নামল। কিন্তু যাত্রী-দুর্ভোগে বিশেষ হেরফের হল না। যাত্রী অনুপাতে বাসের সংখ্যা এখনও কম বলেই অভিযোগ। বাস না-পেয়ে সকালে চণ্ডীতলার মশাটে অহল্যাবাই রোডে অপেক্ষারত যাত্রীরা মরিয়া হয়ে কলকাতাগামী ‘নন-স্টপ’ বাস থামিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। বাসকর্মীরা মাঝপথে যাত্রী তুলতে অস্বীকার করায় অবরোধ হয়। সকাল ১০টা থেকে প্রায় আধ ঘণ্টা বিক্ষোভের পরে পুলিশ এসে অবরোধ তোলে।
বাসের অভাবে বিশেষত অফিসটাইমে সাধারণ মানুষ নাকাল হচ্ছেন। শ্যামাচরণ চট্টোপাধ্যায় নামে এক নিত্যযাত্রী বলেন, ‘‘বাসই আমাদের ভরসা। পর্যাপ্ত বাস চালাতে না-পারলে নন-স্টপ বাস মাঝপথে থামানো হোক। এই দুর্ভোগ অসহ্য!’’
হুগলি শহরাঞ্চলের বাসিন্দাদের কলকাতা যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ট্রেন। লকডাউনের গেরোয় লোকাল ট্রেন চালু হয়নি। ফলে, কর্মস্থলে পৌঁছতে নাকাল হচ্ছেন মানুষ। জলপথেও কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। সোমবার শেওড়াফুলি থেকেও ফেয়ারলি পর্যন্ত ভেসেল চালু হল। তবু যাত্রীরা বাসকেই বেশি ভরসা করছেন।
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন থেকে চুঁচুড়া-করুণাময়ী বাসরুট চালু হল। বাসটি চুঁচুড়া থেকে ছাড়ছে সকাল ৮টায়। করুণাময়ী থেকে ফেরার বাস সন্ধে পৌনে ছ’টায়। এ দিন চুঁচুড়া, চন্দননগর, শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া— এই চার শহর থেকে ধর্মতলা রুটের ১৭টি এবং করুণাময়ী রুটের ১০টি বাস চলেছে। যা আগের সপ্তাহের চেয়ে বেশি। এ দিন জেলার ২৬টি বেসরকারি রুটে ৯৩টি বাস চলেছে বলে জানিয়েছেন, হুগলির আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা সোমনাথ চক্রবর্তী।
এ দিকে, শ্রীরামপুর-নিউটাউন এবং চুঁচুড়া-দক্ষিণেশ্বর (বাগখাল থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত সম্প্রসারিত) দু’টি বেসরকারি রুটের বাসে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার অভিযোগ তুলেছে ‘অল বেঙ্গল সিটিজেন্স ফোরাম’ নামে একটি নাগরিক সংগঠন। সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, আসন সংখ্যার বেশি যাত্রী তোলায় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। যাত্রীদের একাংশ মাস্ক ব্যবহার করছেন না। বিষয়টি জানিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এ দিন ওই সংগঠনের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ই-মেল করা হয়। প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছেও।
এই বিষয়ে বাসমালিক এবং কর্মীদের দাবি, সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছনোর তাগিদে অফিসযাত্রীরাই নিয়মের পরোয়া না-করে বাসে উঠে পড়ছেন। তাঁরা যাত্রীদের সঙ্গে সঙ্ঘাতে যেতে নারাজ। তবে, অফিস-টাইম বাদ দিলে বাসে যাত্রী হচ্ছে না। গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন রুটের বাস-মালিকদেরও দাবি, দিনভর ফাঁকা বাস চালাতে হচ্ছে। ভাড়া না-বাড়ালে বেশি দিন বাস চালানো কার্যত অসম্ভব।
এক বাসমালিক বলেন, ‘‘ডিজেলের দাম ৭০ টাকা ৩৪ পয়সা লিটার হয়ে গেল। লকডাউনের আগে এই দাম ৭ টাকা কম ছিল। একে যাত্রী নেই। তায় ডিজেলের দাম বাড়ছে। ডাহা লো কসান হচ্ছে। এ বার ডিজেল কেনার টাকাও থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy