Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

উচ্চ মাধ্যমিকে বোলতার হামলা, হাসপাতালে পরীক্ষা

পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে গাছ তলায়— সঙ্গে ছিলেন অভিভাবকেরাও। হঠাৎ ধেয়ে এল বোলতার ঝাঁক। হূল বিদ্ধ হয়ে জখম হলেন ১০ জন অভিভাবক ও জনা সাতেক পরীক্ষার্থী। ছয় পরীক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসার পর পরীক্ষার হলে যেতে পারলেও একজন পরীক্ষা দেয় গ্রামীণ হাসপাতালে।

উপায়: সহায়ককে নিয়ে পরীক্ষায় সৌম্য। নিজস্ব চিত্র

উপায়: সহায়ককে নিয়ে পরীক্ষায় সৌম্য। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পান্ডুয়া ও আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০০:৪৫
Share: Save:

পরীক্ষা শুরুর প্রায় মিনিট কুড়ি আগে শেষবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে গাছ তলায়— সঙ্গে ছিলেন অভিভাবকেরাও। হঠাৎ ধেয়ে এল বোলতার ঝাঁক। হূল বিদ্ধ হয়ে জখম হলেন ১০ জন অভিভাবক ও জনা সাতেক পরীক্ষার্থী। ছয় পরীক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসার পর পরীক্ষার হলে যেতে পারলেও একজন পরীক্ষা দেয় গ্রামীণ হাসপাতালে।

বৃহস্পতিবার খন্যান ইটাচুনা শ্রী নারায়ণ ইনস্টিটিউশনের ঘটনা। এ দিন ছিল উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা। ওই স্কুলে পরীক্ষা দিতে এসেছিল পান্ডুয়া শশিভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা। পরীক্ষা শুরু আগে স্কুলের বাইরে বোলতা হানায় জখম হয় তারা। বাদ যাননি অভিভাবকরাও। সকলেরই শরীরে অসংখ্য বোলতা হূল ফুটিয়েছে বলে অভিযোগ। সাত পরীক্ষার্থীকে প্রথমে ইটাচুনা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছয় জনকে ছেড়ে দিলে তারা পরীক্ষাকেন্দ্রে চলে যায়। পনেরো মিনিট দেরিতে পরীক্ষা শুরু করায় ওই ছ’জনকে অতিরিক্ত পনেরো মিনিট সময় দেওয়া হয়।

কিন্তু সৌম্য কর্মকার নামে এক ছাত্রের মারাত্মক জখম ছিল। তাকে স্যালাইন দিতে হয়। সেই অবস্থাতেই সৌম্য হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেয়। অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয় তাকে। গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক সুখেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মনে হয় শ’খানেক বোলতা আক্রমণ করেছিল সৌম্যকে। মাথা ব্যথা করছিল। মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েছে ও।’’

সৌম্যর বাবা সুজিত কর্মকার বলেন, ‘‘গাছেই কোথাও বোলতার চাক ছিল। কোনও ভাবে সেখানে নাড়া পড়ে যায়। আমার ছেলেকেই যেন ছেঁকে ধরল বোলতা। উপায় না দেখে ওকে পুকুরে ডুবিয়ে দিই। তারপর নিয়ে যাই হাসপাতালে।’’ সুজিতবাবুর আশঙ্কা, ‘‘ছেলের শারীরিক ও মানসিক যা অবস্থা তাতে পরের পরীক্ষাগুলো কী হবে কে জানে!’’ অভিভাবকদের ক্ষোভ, স্কুলের সামনে অত বড় চাক ছিল, আগেই তো কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল সেটি ভেঙে দেওয়া।

এ দিন হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেয় আরও কয়েকজন। গোঘাটের কাঠালী হাইস্কুলের ছাত্র পুষ্পেন্দু চক্রবর্তীর পরীক্ষা ছিল বালিবেলা হাইস্কুলে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা দিতে এসে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। একটু স্বস্তি বোধ করলে সেখানেই সে পরীক্ষা দেয়।

তিরোল হাইস্কুলের ছাত্রী রূপা খাতুন গত ১৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। মঙ্গলবার নির্ভয়পুর বাদলকোনা ঘিয়া নীলকণ্ঠ শিক্ষা নিকেতনে বাংলা পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দ্বিতীয় পরীক্ষাটি হাসপাতালে বসেই দিতে হয় তাকে। আবার আরামবাগ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী পায়েল খান অ্যাপেন্ডিক্সের যন্ত্রণা নিয়ে বুধবার আরামবাগের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়। বৃহস্পতিবার সেখানেই তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE