Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ অসমের বৃদ্ধা

সত্তরোর্ধ্ব মিনতি কর্মকার আদতে অসমের শপত গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন ছেলের সঙ্গেই থাকতেন। পরিবারের লোকেরা জানান, মিনতিদেবীর স্মৃতিভ্রমজনিত অসুখ রয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় বাড়ি থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান

নিখোঁজ: মিনতি কর্মকার।

নিখোঁজ: মিনতি কর্মকার।

 নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভিন্‌রাজ্যে চলে এসেছিলে‌ন এক বৃদ্ধা। রেল পুলিশ অসুস্থ মানুষটিকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েও দিয়েছিল। কিন্তু হাসপাতাল থেকেও নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন তিনি। কী করে হাসপাতালের কর্মীদের নজর এড়িয়ে একজন বয়স্ক মানুষ উধাও হয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বৃদ্ধার পরিজনরা।

সত্তরোর্ধ্ব মিনতি কর্মকার আদতে অসমের শপত গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন ছেলের সঙ্গেই থাকতেন। পরিবারের লোকেরা জানান, মিনতিদেবীর স্মৃতিভ্রমজনিত অসুখ রয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় বাড়ি থেকে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের তরফে অসমের তুলসিবিল ফাঁড়িতে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৫ জুলাই কয়েকজন ট্রেনযাত্রী তাঁকে শ্রীরামপুর স্টেশন থেকে উদ্ধার করেন। শেওড়াফুলি জিআরপি থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। রাতে জিআরপি কার্যালয়েই রাখা হয়েছিল তাঁকে। অসুস্থ বোধ করায় পরের দিন তাঁকে শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রেল পুলিশের বক্তব্য, মহিলা নিজের ঠিকানা বলতে পারেননি। ৮ জু‌লাই দুপুরে তিনি হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান।

শ্রীরামপুরে কেউ ওই বৃদ্ধার ছবি তুলে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পোস্ট করেছিলেন। সেখান থেকেই মিনতিদেবীর আত্মীয়রা বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁদের বক্তব্য, শেওড়াফুলি জিআরপি, শ্রীরামপুর থানা এবং ওয়ালশ হাসপাতালে তাঁরা ফোন করেন। কিন্তু উদ্বেগ কমার বদলে বেড়ে যায়। কারণ তাঁরা জানতে পারেন, মিনতিদেবী হাসপাতাল থেকেও চলে গিয়েছেন।

মিনতিদেবীর নাতনি, রায়গঞ্জের বাসিন্দা রিয়া রায় ফোনে বলেন, ‘‘সব জায়গায় ফোন করেছি। কিন্তু পুলিশ বা হাসপাতাল কেউ সদর্থক কিছু জানাতে পারেনি। হাসপাতালের তরফে বলা হয়, কেউ বেরিয়ে গেলে তাদের দায় নয়।’’ রিয়ার আরও বক্তব্য, লালবাজারেও গোটা বিষয়টি তাঁরা ফোনে জানিয়েছেন। সেখান থেকে নিখোঁজ ডায়েরির বিস্তারিত চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অসম পুলিশের কাছ থেকে এ ব্যাপারে সাহায্য মেলেনি।

পুলিশ থেকে হাসপাতাল— সবাই অবশ্য নিয়ম মাফিক কাজের কথা জানিয়েছে। জিআরপি-র বক্তব্য, মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পাশাপাশি তাঁর ছবি দিয়ে সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় খবর পাঠানো হয়। ওয়ালসের সুপার কমলকিশোর সিংহ বলেন, ‘‘মহিলার চিকিৎসা চলছিল। বিকেলের দিকে সকলের নজর এড়িয়ে বেরিয়ে যান। বিষয়টি নজরে আসতেই শ্রীরামপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, রোগীর জন্য নির্দিষ্ট পোশাক না থাকায় সব ক্ষেত্রে রোগীকে চিহ্নিত করা যায় না। নার্সদের পক্ষে সব সময় সকলের দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হয় না।

শ্রীরামপুর থানা সূত্রের বক্তব্য, নিখোঁজ ডায়েরির ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় বার্তা পাঠানো হয়েছে। সব দফতরেরই বক্তব্য, মহিলার ঠিকানা জানা না যাওয়ায় বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE