Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
সমস্যা হাওড়া গ্রামীণ এলাকায়

অভিযোগ বাড়লেও হল না থানা

ধূলাগড়িতে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পরে (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের তৎকালীন পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্রকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সরানো হয়েছিল সাঁকরাইল থানার তৎকালীন ওসিকে। তখন ধূলাগড়ি থানা তৈরির জন্য রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর  থেকে হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশকে জমিও দেখতে বলা হয়েছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০৯
Share: Save:

ধূলাগড়ির দুষ্কৃতী তাণ্ডবের পরে কেটে গিয়েছে প্রায় এক বছর। কথা ছিল, সাঁকরাইল ও পাঁচলা থানার সীমানায় ধূলাগড়িতে নতুন থানা তৈরি হবে। কিন্তু সেসব কিছুই হয়নি। শুধু ধূলাগড়ি নয়, গত এক বছরে একের পর এক ঘটনায় তেতে উঠেছে হাওড়া জেলার গ্রামীণ এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বড় থানাগুলির এলাকা ভেঙে ছোট থানা তৈরির একাধিক প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরে। কিন্তু কোনও নতুন থানা তৈরি তো দূরের কথা, কাজও শুরু হয়নি।

ধূলাগড়িতে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পরে (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের তৎকালীন পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্রকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সরানো হয়েছিল সাঁকরাইল থানার তৎকালীন ওসিকে। তখন ধূলাগড়ি থানা তৈরির জন্য রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশকে জমিও দেখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কাজ এগোয়নি।

হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট লাগোয়া সলপ এলাকাটি গ্রামীণ জেলা পুলিশের অধীনে ডোমজুড় থানার অন্তর্গত। তোলাবাজি, দুষ্কৃতী তাণ্ডবের মতো ঘটনায় বার বার সামনে এসেছে এই এলাকার নাম। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে আলাদা সলপ থানা তৈরির প্রস্তাব একাধিকবার রাজ্য পুলিশে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেই প্রস্তাবও দিনের আলো দেখেনি।

বছর কয়েকের মধ্যে সলপ ও সংলগ্ন এলাকায় কয়েকটি নতুন কারখানা তৈরি হয়েছে। তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তোলাবাজির অভিযোগ। জেলা পুলিশের একাংশ জানিয়েছেন, হাওড়া কমিশনারেট এলাকায় প্রশাসনিক কড়াকড়ি তুলনায় বেশি। তাই ওই এলাকার দুষ্কৃতীরা ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে কমিশনারেট সংলগ্ন সলপ এবং বাঁকড়ায় চলে আসে। শুধু শহর হাওড়া নয়, হুগলির একাংশ থেকেও দুষ্কৃতীরা ডানকুনি হয়ে সলপে চলে আসে। সলপ ও বাঁকড়া সংলগ্ন মুম্বই রোডের পাশে পার্কিংয়ের নামেও তোলাবাজি চলে বলে অভিযোগ। বাঁকড়ায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে বটে কিন্তু তার পরিকাঠামো দিয়ে ওই এলাকার দুষ্কৃতীরাজ বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে পুলিশ কর্তাদের একাংশই জানিয়েছেন।

বসিরহাট থেকে হাওড়ার শ্যামপুরের গাদিয়াড়া পর্যন্ত বাস রুট রয়েছে। বাংলাদেশ লাগোয়া বসিরহাট থেকে কয়েকদিন আগেই জঙ্গি ধরা পড়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, ওই রুটের বাসে চেপে জঙ্গিরা গাদিয়াড়ায় চলে আসতে পারে। গাদিয়াড়া পর্যটনকেন্দ্র হওয়ায় সেখানে হোটেল এবং লজ রয়েছে। তাই তাদের লুকোতে সমস্যা হবে না। গাদিয়াড়া থেকে লঞ্চ করে অন্য জেলাতেও পালিয়ে যাওয়া সম্ভব। এই সব কারণেই গাদিয়াড়ায় পুলিশ ফাঁড়ির তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। হয়নি সেটাও। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘মাঝে মাঝে বসিরহাট-গাদিয়াড়া রুটের বাসে নজরদারি চালানো হয়। স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি না হলে নজরদারি অসম্ভব।’’

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, ‘দুষ্কৃতীদের উপরে নজর রাখার ক্ষেত্রে আমাদের কোনও ফাঁক নেই। বড় থানাগুলিকে ভেঙে নতুন থানা গড়ার প্রস্তাব অনেক আগেই দেওয়া হয়েছে। সবুজ সঙ্কেত মিললেই কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE