Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Jayashree Insulator Factory

জয়শ্রী অচলই, বাড়ল সমস্যা

মালিকপক্ষ জানান, তাঁরাও মনে করছেন, মুষ্টিমেয় কিছু ঠিকা-শ্রমিকের জন্য এই পরিস্থিতি। সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠনের তরফে যেন তাঁদের বোঝানো হয়। ঠিকাদারকে বলা হয়, ওই শ্রমিকদের বুঝিয়ে কাজে যোগ দিতে বলা হোক। অন্যথায় বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রিষড়া শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

সমাধান দূরঅস্ত্‌, উল্টে ঠিকা-শ্রমিকদের একাংশের অসন্তোষ নিয়ে সমস্যা আরও বাড়ল রিষড়ার জয়শ্রী ইনস্যুলেটর কারখানায়। ক্ষুব্ধ ওই শ্রমিকরা শুক্রবারেও কাজ করেননি। তার উপরে, কিছু সহকর্মী এবং ক্যান্টিন-কর্মীদের কাজে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগও উঠল তাঁদের বিরুদ্ধে। সমস্যা সমাধানে এ দিন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হলেও বিশেষ সুরাহা হয়নি। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা নিয়ে চিন্তায় সকলেই।

ওই কারখানায় ঠিকা-শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ছ’শো। পাঁচ বছর অন্তর শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়। মঙ্গলবার স্বাক্ষরিত নতুন চুক্তি অনুযায়ী ঠিকা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি পাঁচ বছরে ধাপে ধাপে ৯২ টাকা বাড়বে। ঠিকা-শ্রমিকদের একাংশের বক্তব্য, এত কম টাকা বাড়ানো হলে সংসার চলবে না। আগের চুক্তিতে পাঁচ বছরে ধাপে ধাপে ১২০ টাকা বাড়ানো হলে এ বার কেন তা কমানো হল, সেই প্রশ্নও তাঁরা তুলছেন। এর প্রতিবাদে বুধবার থেকে তাঁরা কাজ বন্ধ করে দেন।

অভিযোগ, শুক্রবার কিছু ঠিকা-শ্রমিক কাজে যোগ দিতে গেলে আন্দোলনকারীরা তাঁদের ঢুকতে বাধা দেন। ক্যান্টিনের কর্মীদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে, খাবার না-পেয়ে স্থায়ী শ্রমিকরা সমস্যায় পড়েন। উৎপাদনের কাজ শিকেয় ওঠে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বরাত না-থাকায় আড়াই বছর ধরে পুরোদমে উৎপাদন করা যাচ্ছে না। লোকসান হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই চুক্তি করা হয়েছে। তা ছাড়া, গোটা দশেক বৈঠকের পরে যে চুক্তি হল, তা নিয়ে অসন্তোষের কারণ তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না।

শুক্রবার দুপুরে দুই উপ শ্রম-কমিশনার পার্থসারথি চক্রবর্তী এবং সুকান্ত রায়চৌধুরীর উপস্থিতিতে মালিকপক্ষ, ঠিকাদার ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, শ্রমিক নেতারা জানান, চুক্তি নিয়ে তাঁদের কোনও বক্তব্য নেই। কিছু ঠিকা-শ্রমিকের জন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে। মালিকপক্ষ জানান, তাঁরাও মনে করছেন, মুষ্টিমেয় কিছু ঠিকা-শ্রমিকের জন্য এই পরিস্থিতি। সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠনের তরফে যেন তাঁদের বোঝানো হয়। ঠিকাদারকে বলা হয়, ওই শ্রমিকদের বুঝিয়ে কাজে যোগ দিতে বলা হোক। অন্যথায় বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক।

উপ শ্রম-কমিশনার পার্থসারথি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চুক্তি থেকে সরে আসার কোনও জায়গা নেই। কারখানার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শ্রমিক স্বার্থ দেখেই চুক্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। তাঁদের বোঝাতে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের দায়িত্বের কথাও বলা হয়েছে।’’

আইএনটিটিইউসি নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চুক্তির ক্ষেত্রে কারখানার লোকসানের বিষয়টি ভাবতে হয়েছে। পরিস্থিতির কথা শ্রমিকদেরও অজানা নয়। তবু, ঠিকা-শ্রমিকদের একাংশ কেন বেঁকে বসছেন, বোঝা দুষ্কর।’’ এআইটিইউসি নেতা দীপক চক্রবর্তীর বক্তব্য, কারখানাকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে যে ভাবে চুক্তি করা উচিত, তাই হয়েছে। যে শ্রমিকেরা এর বিরুদ্ধাচরণ করছেন, ঠিকাদারকে তাঁদের কাজে ফেরানোর দায়িত্ব নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jayashree Insulator Factory Rishara Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE