কাজে যোগ শ্রমিকদের। বৃহস্পতিবার শ্যামনগর জুটমিলে। ছবি: তাপস ঘোষ
আলোচনায় সমস্যা মিটল ভদ্রেশ্বরের নর্থ শ্যামনগর জুটমিলে। দু’দিন পরে বৃহস্পতিবার সেখানে কাজে যোগ দিলেন শ্রমিকেরা। চালু হল উৎপাদন। কিন্তু হুগলি শিল্পাঞ্চলের আর এক কারখানা, রিষড়ার জয়শ্রী ইনস্যুলেটরে কাজ হল না।
লকডাউনের আগে জুটমিলটির ‘ব্যাচিং’ বিভাগে প্রায় ১৭৫ জন শ্রমিক কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউনের পরে মিল খোলার পর সব অস্থায়ী শ্রমিককে কাজ দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছিল। অসন্তোষের জেরে সব শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দেন। সমস্যা সমাধানে ভদ্রেশ্বর পুর-কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বুধবার সন্ধ্যায় পুরসভার হলে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মিল কর্তৃপক্ষ। সেখানেই জট কাটে। আগামী রবিবারের মধ্যে সব শ্রমিককেই কাজে নেওয়ার আশ্বাস দেন কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিক নেতা লালবাবু সিংহ বলেন, ‘‘সমস্যা মিটে যাওয়ায় আমরা খুশি। ফের সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব।’’ মিল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, সমস্যা সমাধান হয়েছে। স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে।”
জয়শ্রী ইনস্যুলেটরে অচলাবস্থা চলছেই। বৃহস্পতিবারেও কাজ করলেন না ঠিকা-শ্রমিকেরা। ফলে, এ দিনও উৎপাদন ব্যাহত হয়। কারখানা সূত্রের খবর, এ দিন কর্তৃপক্ষ শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। তবে, পরিস্থিতির হেরফের হয়নি। এই অবস্থায় কারখানার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কার মেঘ সংশ্লি্ষ্ট নানা মহলে। শ্রম দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
ওই কারখানায় পাঁচ বছর অন্তর শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়। মঙ্গলাবার নতুন চুক্তিতে ঠিকা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি পাঁচ বছরে ধাপে ধাপে ৯২ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। ঠিকা-শ্রমিকদের একটা বড় অংশের ক্ষোভ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম প্রচুর বেড়েছে। এত অল্প টাকা বাড়ানো হলে সংসার চলবে না। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বরাত কমে যাওয়ায় গত আড়াই বছর ধরে উৎপাদন কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। মন্দা চলছে। করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতির বহর আরও বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই চুক্তি করা হয়েছে। তা ছাড়া চুক্তি হয়ে যাওয়ার পরে এই বিষয়ে আপত্তি শুনতে কর্তৃপক্ষ রাজি নন। ঠিকা-শ্রমিকেরা মজুরির অঙ্ক বাড়ানোর দাবিতে বুধবার থেকে কাজ বন্ধ করে দেন।
সিটু নেতা মনি পাল বলেন, ‘‘যে টাকা বাড়ানো হবে, তাতে আমরাও খুশি নই। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই অঙ্কেই আমাদের সম্মত হতে হয়েছে। সব শ্রমিককেই এটা বুঝতে হবে।’’ একই বক্তব্য আইএনটিটিইউসি নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy