Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
মুক্তার শেখের বাড়িতে মন্ত্রী, বিধায়কেরা

দায়ী আপনারাই, দুষলেন কর্মীরা

নিহত নেতার বাড়ি যেতে গিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা। মঙ্গলবার বিকেলে আরামবাগের মজফ্ফরপুর গ্রামে নিহত মুক্তার শেখের বাড়ি পৌঁছে অবশ্য দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলেন তাঁরা।

প্রতিবাদ: তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কদের ঘিরে বিক্ষোভ দলীয় নেতা-কর্মীদের। মঙ্গলবার আরামবাগের মজফ্ফরপুর গ্রামে। ছবি: মোহন দাস

প্রতিবাদ: তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কদের ঘিরে বিক্ষোভ দলীয় নেতা-কর্মীদের। মঙ্গলবার আরামবাগের মজফ্ফরপুর গ্রামে। ছবি: মোহন দাস

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১৩
Share: Save:

নিহত নেতার বাড়ি যেতে গিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা। মঙ্গলবার বিকেলে আরামবাগের মজফ্ফরপুর গ্রামে নিহত মুক্তার শেখের বাড়ি পৌঁছে অবশ্য দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলেন তাঁরা।
এ দিন মুক্তারের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আরামবাগ গিয়েছিলেন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত ও অসীমা পাত্র। সঙ্গে ছিলেন দুই বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল ও অসিত মজুমদার। বিকেল ৩টে নাগাদ কাবলে মোড়ে তাঁদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবি, খুনে মূল অভিযুক্ত হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আজিজ খান ওরফে লাল্টু ও তাঁর সঙ্গী নুরুল হুদাকে গ্রেফতার করে ফাঁসি দিতে হবে। তার খানিক আগেই তাঁরা মিনিট কুড়ি পথ অবরোধ করেন আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডে। মন্ত্রীদের গাড়ি এলে তাঁরা দাবি তোলেন, লাল্টু, হুদাদের দল বহিষ্কার না করা পর্যন্ত গাড়ি গ্রামে যেতে দেওয়া হবে না।
পুলিশ এবং ব্লক নেতাদের তৎপরতায় সেই বিক্ষোভ হটিয়ে দেওয়া হয়। কাবলে থেকে মজফ্‌ফরপুর পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় ছ’বার বিক্ষোভের মুখে পড়েন মন্ত্রী, বিধায়কেরা। চলে জেলা যুব নেতাদের নাম ধরে অকথ্য গালাগাল। পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।
বিকেল ৪টে পর্যন্তও মুক্তারের দেহ ময়নাতদন্তের পর গ্রামে এসে পৌঁছয়নি। অথচ, সেখানে জমায়েত হয়েছেন বেশ কয়েকশো মানুষ। এমনই পরিস্থিতিতে তপনবাবুরা পৌঁছন নিহতের বাড়িতে। গাড়ি বাড়ির কাছে পৌঁছতে ফের তাঁদের ঘিরে ধরেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন এসেছেন আপনারা। খুনিদের দলে নিয়ে, নেতা করেছেন। সব কিছুর জন্য আপনারাই দায়ী।’’ মুক্তারের বাড়ির সামনেও লাল্টু, নুরুলকে বহিষ্কার ও হরিণখোলা ১ ও ২ পঞ্চায়েত বোর্ড ভেঙে দেওয়ার দাবি ওঠে।
দিন কয়েক আগে জয়নগরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এক নিরীহ ব্যক্তি-সহ তিনজনের মৃত্যুর পর সেখানকার নেতাদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ এনেছিলেন দলীয় কর্মীরা
মুক্তারের স্ত্রী সাইনারার সঙ্গে দেখা করলে তিনি অসীমাদেবীকে বলেন, ‘‘লাল্টু-হুদারা নৃশংসভাবে পিটিয়ে মেরেছে আমার স্বামীকে। ওদের এখনও পুলিশ ধরেনি। দল থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিছু একটা করুন।’’ তপন দাশগুপ্ত এ দিন বলেন, ‘‘দল মুক্তারের পরিবারের পাশে রয়েছে। পুলিশকে বলেছি লাল্টু, হুদারা যেখানেই লুকিয়ে থাকুক, অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। দোষীরা ছাড়া পাবে না।’’
লাল্টু, হুদাকে গ্রেফতার না করার অভিযোগ নিয়ে আরামবাগের এসডিপিও কৃশানু রায় বলেন, “সমস্ত অভিযুক্তেরই খোঁজ চলছে। সকলকেই গ্রেফতার করা হবে।” বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ মুক্তার শেখের দেহ এসে পৌঁছয় গ্রামের বাড়িতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Death Politics Conflicts
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE