Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দশ মাস পর ঘরের ছেলে ফেরাল ফেসবুক

শঙ্কর বলেছে, ‘‘আমার কাছ টাকা ছিল না। ওই সন্ধ্যায় ট্রেনে করে বর্ধমান চলে গিয়েছিলাম। রাতে স্টেশনে বসে কাঁদছিলাম। সে সময় কয়েকজন লোক আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। তারপর আর কিছু মনে নেই।’’

মা ও দাদার সঙ্গে শঙ্কর। নিজস্ব চিত্র

মা ও দাদার সঙ্গে শঙ্কর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১৯
Share: Save:

বাবার বকুনি খেয়ে ঘর ছেড়েছিল বছর বারোর শঙ্কর। হুগলির বৈঁচি থেকে বর্ধমান হয়ে সে ছেলের ঠাঁই হয়েছিল রাজস্থানের এক সরকারি হোমে। দশ মাস পর বৃহস্পতিবার ঘরের ছেলে ফিরল ঘরে। সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া।

বৈঁচির বেড়েলা গয়লাপুকুরের বাসিন্দা দুলাল বিশ্বাসের ছোট ছেলে শঙ্কর। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বরের কথা স্পষ্ট মনে করতে পারেন দুলালবাবু। দিন মজুরি করে সংসার চালানো দুলালবাবুর ঘরে টিভি নেই। ছেলে তাই যেত পাশের বাড়ি। ওই সন্ধ্যায় স্কুল থেকে ফেরার পর পাশের বাড়ি যেতে চেয়েছিল শঙ্কর। নিষেধ করেছিলেন বাবা। সেই রাগেই ঘর ছেড়েছিল শঙ্কর। সারা রাত না ফেরায় পরেরদিন নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন দুলালবাবু। লাভ হয়নি।

তিনি বলেন, ‘‘কোথায় না গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও দরবার করেছিলাম। লাভ হয়নি। আমার খুবই কম রোজগার। তারই মধ্যে কত টাকা পয়সা খরচ করে কত জায়গায় গিয়েছি ছেলেকে খুঁজতে। পাইনি।’’ পান্ডুয়া থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে এ রাজ্য এমনকি ঝাড়খণ্ডের বহু এলাকায় খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি শঙ্করকে।

এরই মধ্যে তাঁর বড় ছেলে মোহন ও তার বন্ধু তুষার ফেসবুকে শঙ্করের নিখোঁজ সংক্রান্ত ছবি দেয়। সেখানে দেওয়া হয়েছিল দুলালবাবুর ফোন নম্বর। সেই পোস্টের সূত্র ধরেই গত ১ সেপ্টেম্বর তাঁর কাছে একটি ফোন আসে রাজস্থান থেকে। ফের থানায় ছোটে শঙ্করের পরিবার। পান্ডুয়া থানার তদন্তকারী আধিকারিক আদেশ শর্মা রাজস্থানের অজমেঢ় শরিফের কাছে সুভাষনগরের একটি হোম থেকে নিয়ে আসেন শঙ্করকে।

কী করে রাজস্থান পৌঁছল শঙ্কর?

মনে করতে পারেনি সে। শুধু বলেছে, ‘‘আমার কাছ টাকা ছিল না। ওই সন্ধ্যায় ট্রেনে করে বর্ধমান চলে গিয়েছিলাম। রাতে স্টেশনে বসে কাঁদছিলাম। সে সময় কয়েকজন লোক আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। তারপর আর কিছু মনে নেই।’’ রাজস্থানের কথা অবশ্য মনে করতে পেরেছে শঙ্কর, ‘‘ওরা আমার কথা বুঝতে পারছিল না। সবাই হিন্দি বলে। স্কুলেও পড়তাম ওখানে।’’

কিন্তু কী করে হোমে ঠাঁই হল শঙ্করের? সে সব বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ পুলিশ। তদন্তকারী এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘তদন্ত চলছে। এর পিছনে শিশু পাচার চক্রের হাত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Missing Facebook Return Pandua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE