Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

লক্ষ্যভ্রষ্ট গুলিতে জখম যুবক

ঘটনায় অভিযুক্ত, বাঁশবেড়িয়ার ক্ষুদিরাম পল্লির বাসিন্দা সোমনাথ দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

চিকিৎসাধীন: হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জখম শঙ্খদীপ। ছবি: তাপস ঘোষ।

চিকিৎসাধীন: হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জখম শঙ্খদীপ। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁশবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০২:৪১
Share: Save:

মাসির বাড়ি থেকে রথের মেলায় যেতে গিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট গুলিতে জখম হলেন চুঁচুড়ার এক যুবক। রবিবার রাতে বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী রোড এলাকায় এই ঘটনায় জখম শঙ্খদীপ দত্তকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই অস্ত্রোপচার করে তাঁর পেট থেকে গুলি বের করেন চিকিৎসকেরা। ঘটনায় অভিযুক্ত, বাঁশবেড়িয়ার ক্ষুদিরাম পল্লির বাসিন্দা সোমনাথ দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

হুগলি (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘পুরনো শত্রুতার জেরে একজনের দিকে ছোড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় এক নিরীহ যুবক জখম হয়েছেন। ধৃতকে জেরা করে রহস্য জানার চেষ্টা হচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চুঁচুড়ার কেওটা-লাটবাগানের বাসিন্দা, বছর চব্বিশের শঙ্খদীপ রবিবার সকালে বাঁশবেড়িয়ায় মাসির বাড়ি যান। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি সেখানকার রথের মেলা দেখতে যাবেন বলে বেরোন। মাসির বাড়ি থেকে কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে প্রথমে স্থানীয় বন্ধুদের মেলায় যাওয়ার জন্য ফোন করছিলেন শঙ্খদীপ। সামনেই একটি মাচায় বসে ছিলেন ওই এলাকারই বাসিন্দা শুভদীপ মণ্ডল এবং তাঁর এক বন্ধু। ৯টা নাগাদ একজনের মোটরবাইকে চড়ে মদ্যপ অবস্থায় সোমনাথ সেখানে আসে। তাকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করতে দেখেই ভয়ে শুভদীপ বন্ধুকে নিয়ে মাচা থেকে নেমে দ্রুত হাঁটতে থাকেন। শুভদীপকে লক্ষ করে সোমনাথ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। কিন্তু তখনই শঙ্খদীপও ফোনে কথা শেষ করে হাঁটা শুরু করতেই গুলিটি এসে তাঁর কোমরে লাগে। শঙ্খদীপ লুটিয়ে পড়েন। গুলির আওয়াজে তাঁর মাসি রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং এলাকার লোকজন চলে আসেন। সোমনাথ মোটরবাইকে উঠে চম্পট দেয়। ওই রাতেই তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় ধৃত সোমনাথ কবুল করেছে, সে শুভদীপকেই মারতে গিয়েছিল। গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কারণ, শুভদীপ তার বাবাকে মাঝেমধ্যেই উত্যক্ত করতেন বলে সোমনাথের অভিযোগ। একই সঙ্গে তদন্তকারীদের কাছে তার দাবি, কিছুদিন আগে তার বাবা ট্রেন থেকে পড়ে মারা যান। সেই ট্রেনে শুভদীপও ছিলেন। তিনিই বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে ধারণা হয় সোমনাথের। ধৃতের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা রয়েছে এবং তার দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানান।

শুভদীপ অবশ্য সোমনাথের অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কেন সোমনাথের বাবাকে উত্যক্ত করতে যাব? ওর সঙ্গে আমার কোনও শত্রুতা ছিল না। রবিবার রাতে ওকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করতে দেখে ভয়ে মাচা থেকে নেমে পড়েছিলাম। ভাবতেই পারিনি, ও আমাকে খুন করতে এসেছিল!’’

ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওই এলাকায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গুলিটি শঙ্খদীপের কোমর দিয়ে ঢুকে পেটে আটকে গিয়েছিল। তা বের করা হয়েছে। সোমবার শঙ্খদীপের পরিবারের পক্ষ থেকে সোমনাথের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ দিন চিকিৎসাধীন ওই যুবক বলেন, ‘‘পিছন থেকে গুলির আওয়াজ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা যে আমার কোমরে বিঁধবে, কে জানত?’’ শঙ্খদীপের মাসি বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে এই ধরনের ঘটনা! ভাবলে এখনও গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। রাস্তায় বেরোতেই তো এখন ভয় লাগছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bansberia Firearms
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE