Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চুঁচুড়ায় যুবককে গুলিতে খুন, গ্রেফতার ৫ বন্ধু

ধৃতদের নাম গোবিন্দ মির্ধা, পিন্টু দাস, প্রীতম রানা, সাগর বিশ্বাস এবং প্রসেনজিৎ ধুরি। তারাও সুকান্তনগরের বাসিন্দা।

বিশ্বজিৎ বিশ্বাস

বিশ্বজিৎ বিশ্বাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২১
Share: Save:

ঠাকুর দেখতে যাওয়ার নাম করে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর পাঁচ বন্ধুর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার, মহাসপ্তমীর রাতে চুঁচুড়ার চকবাজার এলাকায় ওই ঘটনায় নিহতের নাম বিশ্বজিৎ বিশ্বাস (৩০)। তাঁর বাড়ি শহরের সুকান্তনগরে। পুরনো শত্রুতার জেরে খুন বলে পুলিশ জানিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত পাঁচ জনকেই। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি নাইন এমএম এবং একটি ওয়ানশটার উদ্ধার করে।

ধৃতদের নাম গোবিন্দ মির্ধা, পিন্টু দাস, প্রীতম রানা, সাগর বিশ্বাস এবং প্রসেনজিৎ ধুরি। তারাও সুকান্তনগরের বাসিন্দা। গোবিন্দই মূল অভিযুক্ত। বছর পাঁচেক আগে তার দাদা গোপালকে ছুরি মেরে আহত করার অভিযোগ উঠেছিল বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে। বিশ্বজিৎকে তখন পুলিশ গ্রেফতার করে। বছরখানেক আগে বিশ্বজিৎ জামিন পান। মামলাটি এখনও চলছে। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে মাঝেমধ্যেই গোবিন্দ হুমকি দিত বলে অভিযোগ।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘পুরনো ক্ষোভের বদলা নিতেই যুবককে খুন করা হয়েছে। জেরায় সে কথা কবুল করেছে ধৃত গোবিন্দ। বাকি চার জনের ভূমিকা এবং ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন নিহতের মা অঞ্জলিদেবী। তিনি বলেন, ‘‘বন্ধুরাই যে এ কাণ্ড ঘটাবে, ভাবতে পারছি না।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎ চুঁচুড়া স্টেশনের কাজে আনাজ বিক্রি করতেন। একই কাজ করেন গোবিন্দর দাদা গোপালও। পাঁচ বছর আগের সেই ঘটনায় অবশ্য দু’জনের সম্পর্কের অবনতি হয়নি। কিন্তু দাদাকে ছুরিতে জখম করার ঘটনা গোবিন্দ ভাল ভাবে নিতে পারেননি। বিশ্বজিতের সঙ্গে সে বন্ধুত্ব রাখলেও মাঝেমধ্যে হুমকিও দিত বলে অভিযোগ। যদিও মঙ্গলবার রাতে বিশ্বজিৎকে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায় গোবিন্দরা। মিলন সিনেমা এলাকায় তারা মদের আসর বসায়। সেখান থেক রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বিশ্বজিৎকে নিয়ে পাঁচ বন্ধু চকবাজার এলাকায় যায়। সেখানে একটি নির্জল গলিতে পুরনো ঘটনার গোবিন্দর সঙ্গে বিশ্বজিতের বচসা হয়। এক ফাঁকে বিশ্বজিৎ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে গোবিন্দ-সহ পাঁচ জন ধাওয়া করে তাঁকে ধরে ফেলে। গোবিন্দ বিশ্বজিৎকে লক্ষ করে পর পর দু’টি গুলি চালায় বলে অভিযোগ। মাথায় ও বুকে গুলি লাগায় ঘটনাস্থলেই বিশ্বজিৎ মারা যান। দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র গোবিন্দরা সেখানেই ফেলে পালায় বলে অভিযোগ।

নিহতের স্ত্রী নমিতা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করায় বুধবার সকালে ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। নমিতা বলেন, ‘‘গোবিন্দ হুমকি দিলেও ভেবেছিলাম পুরনো গোলমাল মিটে গিয়েছে। ওরা তো একসঙ্গে আড্ডাও মারত। শেষে যে খুন করে দেবে কে জানত!’’ ধৃত গোবিন্দের দাদা গোপাল বলেন, ‘‘ইয়ার্কির জেরে হঠাৎ রেগে বিশ্বজিৎ আমার হাতে ওর আনাজ কাটার ছুরির কোপ বসিয়ে দিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এত দিন সেই রাগ পুষে রেখে ভাই যে ওঁকে খুন করবে ভাবিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Murder Crime Youth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE