চুঁচুড়ায় ব্যবসায়ী খুনের ২৪ ঘণ্টা পরে এ বার ছিনতাইবাজের কবলে পড়ে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন এক কলেজ ছাত্রী।
ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে ধরতে পারেনি। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কম নয়। তার মধ্যে সোমবার বিকেলে ওই ছাত্রীর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ আরও বেড়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পুরভোট এসে যাওয়ায় জেলবন্দি দুষ্কৃতীদের জামিনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। সেই সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ অবশ্য দাবি করছে, চুঁচুড়ার পেয়ারাবাগান, রবীন্দ্রনগরের মতো কয়েকটি এলাকায় নিয়মিত তল্লাশি চালানো হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। কিন্তু তারা জামিন পেয়ে বেরিয়েই ফের অপরাধ সংগঠিত করছে। হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কোটেশ্বর রাও বলেন, “দু’টি ক্ষেত্রেই তদন্ত চলছে। কিছু সূত্র মিলেছে। দু’টি ক্ষেত্রেই দ্রুত কিনারা করা যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, চুঁচুড়ার সেনপাড়ার বাসিন্দা, নৈহাটির ঋষি বঙ্কিম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সুকন্যা সরকার নামে ওই ছাত্রী এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছেই মোটরবাইক আরোহী দুই যুবক তাঁর হাত থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিতে গেলে এক ছিনতাইকারী সুকন্যাকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়। সুকন্যা তাঁর ব্যাগ টেনে নিতে গেলে এক ছিনতাইকারী তাঁর গলা লক্ষ করে খুর চালায়। কিন্তু সুকন্যা মাথা সরিয়ে নেওয়ায় অল্পের জন্য খুরের আঘাত থেকে রক্ষা পান। তাঁর চিৎকারে বাসিন্দারা ছুটে আসতেই ছিনতাইকারীরা পালায়। কিছু বাসিন্দা পিছু ধাওয়া করেও তাদের নাগাল পাননি। সুকন্যা চুঁচুড়া থানায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেন। রাত পর্যন্ত এ ঘটনাতেও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।
এক দিন আগেই শহরের এক ব্যবসায়ী খুনের কথা জানার পর থেকেই আতঙ্কে ছিলেন সুকন্যা। কিন্তু ভাবেননি, এ দিন তিনিও আক্রান্ত হতে পারেন। তাঁর কথায়, “যা অবস্থা দাঁড়িয়েছে, মনে হচ্ছে জেলার সদর শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিছুই নেই। কোথা থেকে এত দুষ্কৃতী আসছে?” প্রায় একই প্রশ্ন তুলেছেন তালডাঙা এলাকার আর এক বাসিন্দাও। তিনি বলেন, “পুলিশ যে কী করছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশের এত সময় লাগছে কেন?”
রবিবার সকালে চুঁচুড়ার আইমাডাঙার বাসিন্দা আম ব্যবসায়ী তপন দে তাঁর পড়শির বাড়ির বারান্দায় বসে চা খাওয়ার সময়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন। দুষ্কৃতীরা এসে তাঁকে লক্ষ করে পর পর ১৩টি গুলি করে। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা হেঁটেই চলে যায়। তপনবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার পর থেকে এ দিন পর্যন্ত পুলিশ তপনবাবুর ওই পড়শিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু তদন্ত কতদূর এগিয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পুলিশকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy