খড়্গপুর টাউন থানায় ধৃতেরা। —নিজস্ব চিত্র।
রাতের অন্ধকারে দোকানের ছাদ কেটে মোবাইলের দোকানে ঢুকে চুরি করে চম্পট দিয়েছিল চোরেরা। শুক্রবার রাতে খড়গপুরের ইন্দার সেই চুরির চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে খোওয়া যাওয়া সামগ্রীও। পাঁচ মাস আগেও এই দোকানে চুরি হয়। দোকানের মালিক সুকুমার রায় ক্ষোভের সঙ্গে রবিবার বলেন, “গত বারে যে ভাবে চুরি হয়েছিল, এ বারেও সে ভাবে চুরি হয়েছে। মাস তিনেক হল দোকানের পাশেই সিভিক পুলিশেরা বসে থাকে। তাঁরা কেন ঢালাই ভাঙার শব্দ শুনতে পেল না!” ব্যবসায়ী সমিতির মত, প্রথম চুরির পর পুলিশ সক্রিয় হলে শুক্রবার রাতের ঘটনা এড়ানো যেত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সকালে ইন্দার আনন্দনগরের ওটি রোডের ধারের ওই মোবাইল দোকানে চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। পুলিশকে দোকানের মালিক জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ দোকান বন্ধ করা হয়। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ দোকা খুলে দেখেন ঘর লণ্ডভণ্ড! তারপরই দেখা যায়, ছাদের একটি বড় অংশ কাটা। দোকান মালিক জানান, এ বার প্রায় ৩৪টি মোবাইল চুরি গিয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর একই ভাবে প্রায় ৬৫টি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ চুরি যায় বলে দোকান মালিকের দাবি। দ্বিতীয় চুরির আগে পর্যন্ত যার কোনটিই উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ব্যবসায়ী সমিতি এবং এলাকাবাসীর ক্ষোভ আঁচ করে এ বার অবশ্য সক্রিয় হয় পুলিশ। তারপরই একে একে গ্রেফতার করা হয় পাঁচ সন্দেহভাজনকে।
তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমেই মোবাইল মেরামতির কারিগর রবীন্দ্রপল্লির আক্রম আলি খানকে গ্রেফতার করে। আক্রম গত সেপ্টেম্বরে খোওয়া যাওয়া একটি ল্যাপটপ মেরামত করেছিল বলে পুলিশের দাবি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রবীন্দ্রপল্লির শেখ রহিমের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ল্যাপটপটি। তবে শনিবারের চুরির বিষয়ে তাদের থেকে কোনও সূত্র মেলেনি বলে পুলিশের দাবি। পরে অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার অঞ্জন মাইতি গোপন সূত্রে খবর পান বিদ্যাসাগরপুর এলাকার কিছু লোকের কাছেই রয়েছে মোবাইল। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় এলাকারই শেখ শাহরুখ, শেখ সুরজ ও বালুবস্তির শেখ বাদশার থেকে উদ্ধার হয় এ বারের খোওয়া যাওয়া সব মোবাইল সেট। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “তল্লাশি চালিয়ে আগের বারের চুরিতে যুক্ত দু’জন ও এ বারের চুরিতে যুক্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার হয়েছে।”
রেলশহরে চুরি ও ছিনতাই বাড়ছে। শহরের বিদ্যাসাগরপুর, রামকৃষ্ণপল্লি, পুরাতনবাজার, সুভাষপল্লি, বালাজি মন্দিরপল্লি, ভগবানপুর, ছোটট্যাংরা, তলঝুলি এলাকায় একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশি নজরদারি নিয়েও। গত ১৩ ডিসেম্বর কৌশল্যা সংলগ্ন বারবেটিয়ার এক সোনার দোকানে শাটার কেটে চুরির চেষ্টা হয়। ১১ ডিসেম্বর ছোটাট্যাংরা এলাকায় চারটি দোকানে চুরির অভিযোগ ওঠে। ২৮ অক্টোবর রাতে পুরাতনবাজার মোড়ে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও সাতটি দোকান ও একটি মন্দিরে চুরির অভিযোগ ওঠে। ২০ অক্টোবর ৭ নম্বর রেল কলোনি এলাকায় ছিনতাইয়ের চেষ্টায় দু’রাউন্ড গুলিও চলে বলে স্থানীয়েরা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy