দলের নেতার গায়ে পুলিশের লাঠি পড়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই মেদিনীপুরের কোতয়ালি থানায় গেলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতৃত্বের এক প্রতিনিধি দল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের সঙ্গেও আলোচনা করতে চান তাঁরা। প্রতিনিধি দলের প্রধান তথা তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তী বলেন, “বিষয়টি হালকা ভাবে দেখতে রাজি নই। তাই পদস্থ আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলব।”
সরস্বতী পুজো উপলক্ষে মেদিনীপুর শহরের গির্জা এলাকায় সোমবার রাতে জলসার আয়োজন করেছিলেন মেদিনীপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্মাল্য চক্রবর্তী। পুলিশের দাবি, বহু আগে থেকেই রাত ১০টার পর সব পুজো কমিটিকে মাইক বন্ধের কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু নিষেধের তোয়াক্কা না করে মাইক বাজিয়ে জলসা করায় পুলিশ মাইক তুলে নিতে যায়। পুলিশকে বাধা দিলে পুলিশ লাঠিপেটা করে। যদিও কাউন্সিলরের অভিযোগ, পুলিশ কিছু না বলেই দশটা পাঁচ মিনিটে হাজির হয়ে হঠাৎই লাঠিচার্জ শুরু করে। পরদিন তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকে তৃণমূল। যে বৈঠকে জেলা সভাপতি দীনেন রায়-সহ জেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তখনই সিদ্ধান্ত হয়, সাত সদস্যের এক প্রতিনিধি দল পুলিশের সঙ্গে দেখা করতে যাবে। সেই মতো মঙ্গলবার রাতেই কোতয়ালি থানার আইসি সুশান্ত রাজবংশীর সঙ্গে দেখা করেন জেলা কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তী, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জিতেন্দ্রনাথ দাস, কাউন্সিলর মৌ রায়, অনিল দলবেরা, সংখ্যালঘু সেলের নেতা মহসিন খান, সৌরভ বসু ও তারাপদ পাল। কাউন্সিলরের উপর লাঠিচার্জের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তাঁরা। কেন এমন সক্রিয়তা?
দলীয় সূত্রে ব্যাখ্যা, এমন ঘটনায় জেলায় বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কাউন্সিলর থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতারা কিছুটা আতঙ্কিতও হয়ে পড়বেন। আর উল্টো দিকে পুলিশ কিছুটা সক্রিয় হয়ে উঠে অন্য জায়গাতেও নেতাদের গায়ে হাত তুলে দিতে পারেন। তৃণমূলের জেলাস্তরের এক নেতার কথায়, “অন্য জেলায় দলীয় কর্মীরা পুলিশকে থানায় ঢুকেও মারছে। আর আমাদের জেলায় পুলিশ শেষ কথা বলছে। এমনকি মারছেও! এটা কী মেনে নেওয়া যায়?”
জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। একই সঙ্গে ক্ষতে প্রলেপ লাগাতে ওই ওয়ার্ডে প্রশাসনিক ভাবে কিছু অনুষ্ঠানও করার কথা ভাবতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন স্বয়ং কাউন্সিলর। সেখানে জেলা পুলিশ সুপারকে রাখার অনুরোধ জানানো হবে। এ ভাবেই কাউন্সিলরের মর্যাদা ফেরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন নেতৃত্ব। আর তা করতেই জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy