অঞ্জলি দিচ্ছে নাসিমা। নিজস্ব চিত্র
পুরোহিত মন্ত্র পড়ছেন, ‘নম সরস্বত্যৈ নমো নিত্যং ভদ্রকাল্যৈ নমো নমো.....’। ফুল বেলপাতা নিয়ে করজোড়ে সেই মন্ত্রের সঙ্গেই অঞ্জলি দিচ্ছে বছর পনেরোর নাসিমা খাতুন।
ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা এসসি হাইস্কুলে সম্প্রীতির এই ছবি অবশ্য নতুন নয়। নিয়ম করেই স্কুলের সরস্বতী পুজোয় পুষ্পাঞ্জলি দেয় নাসিমা। বছর পনেরোর ওই ছাত্রী এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। পঞ্চম শ্রেণি থেকে চাঁদাবিলা হাইস্কুলেই পড়ছে সে। প্রতি বছরই সরস্বতী পুজোর অঞ্জলি থেকে প্রসাদ বিতরণ সবেতেই যোগ দিয়েছে সে। বুধবারও এসেছিল। নাসিমার আদি বাড়ি ওড়িশার বালেশ্বরের লছমনখুঁটা গ্রামে। তবে নাসিমা বড় হয়েছে নয়াগ্রামের নিগুই গ্রামে মামার বাড়িতে। চাঁদাবিলা এসসি হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে নিগুই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ত সে। সেখানেও সরস্বতী পুজোয় অঞ্জলি দিত। নাসিমার কথায়, ‘‘সরস্বতী পুজোয় প্রতি বছর অঞ্জলি দিই। বাড়ির কেউ কোনও দিন অমত করেননি।’’
নাসিমার দিদিমা সৈফুন্নেসা বিবি বলেন, ‘‘ঈশ্বর-আল্লাহ সবই তো এক। আমরা যে যার মতো তাঁকে ডাকি।’’ নাসিমার ছোট মামা শেখ আজাজ আলির কথায়, ‘‘মনের কাছেই সব কিছু। নাসিমার মন যা চেয়েছে, তাতে বাধা দেব কেন?’’ তিনি জানান, নিগুই গ্রামে ব্রাহ্মণ, কুড়মি, আদিবাসী সব সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। উৎসব-অনুষ্ঠানে সবার আমন্ত্রণ থাকে।
চাঁদাবিলা এসসি হাইস্কুলের সংস্কৃতের শিক্ষিকা পর্ণরেখা সাম দে জানান, প্রতি বছর স্কুলের পুজোয় নানা দায়িত্ব পালন করে নাসিমা। অঞ্জলি দেয়। এই বিষয়টা কখনও আলাদা করে দেখা হয়নি। ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক প্রসেনজিৎ প্রধানের কথায়, ‘‘আমরা পড়ুয়াদের মানব-ধর্মের পাঠ দিই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy