Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পড়াশোনার চাপ, ছাত্রী আত্মঘাতী

স্বপ্ন ছিল গবেষণার। কিন্তু স্নাতকের প্রথম বর্ষেই জীবন যুদ্ধে হার মানলেন তিনি। পড়াশোনার চাপ সামলাতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন ওই ছাত্রী। অন্তত সুইসাইড নোটে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সুতাহাটা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩৩
Share: Save:

স্বপ্ন ছিল গবেষণার। কিন্তু স্নাতকের প্রথম বর্ষেই জীবন যুদ্ধে হার মানলেন তিনি। পড়াশোনার চাপ সামলাতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন ওই ছাত্রী। অন্তত সুইসাইড নোটে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সকালে সুতাহাটা ব্লকের চৈতন্যপুরে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সুতাহাটা থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরীর নাম ইন্দ্রজিতা জানা (১৭)। তিনি মহিষাদল রাজ কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। ইন্দ্রজিতার শোওয়ার ঘর থেকে হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোট মিলেছে। তাতে ওই প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর পড়াশোনার ক্ষেত্রে ‘ব্যর্থতা’র গ্লানি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ দিন সকালে খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে যায় পুলিশ। তারা দেখে, সিলিং ফ্যানে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিলেন ইন্দ্রজিতা। ঘরে তল্লাশি করতে গিয়ে পাওয়া যায় ওই সুইসাইড নোট।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্দ্রজিতা মহিষাদলের রাজ কলেজে রসায়নে স্নাতক বিভাগে পড়াশুনো করতেন। গত ২৯ অগষ্ট তাঁর একটি সেমেস্টারের ফলাফল বেরোয়। পাস কোর্সের অঙ্কে পাশ নম্বর পাননি তিনি। জানা গিয়েছে, তারপর থেকে ইন্দ্রজিতা কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বাড়িতেও একাই থাকতেন।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ইন্দ্রজিতা মেধাবী ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে পরিবারের লোকেদের অনেক আশা ছিল। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল হয়নি ইন্দ্রজিতার। প্রতিবেশীদের দাবি, কলেজে ফলাফল ভাল না হওয়ায় বাড়িতে হয়তো গঞ্জনার শিকার ছিলেন ইন্দ্রজিতা। তাঁর বাবা শম্ভুচরণ জানা পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী। বাবা, মা এবং দাদার সঙ্গে বাড়িতে থাকতেন ইন্দ্রজিতা। পরিবার সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরের পর তিনি কারও সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। বাবা শম্ভুচরণ বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে একা থাকত। কারও সঙ্গে ঠিকমত কথা বলত না। কারণ জানতে চাইলেও কিছুই বলত না। ও যে এমন করবে, তা বুঝতে পারিনি।’’

সুসাইড নোটে ইন্দ্রজিতা লিখেছেন, ‘আর পারছি না নিজের সঙ্গে লড়াই করতে।.... তোমাকে কী করে বলব বাবা যে আমি ম্যাথে সাপ্লি পেয়েছি....’। ওই লেখা দেখেই পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে আত্মঘাতী হয়েছেন ইন্দ্রজিতা। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তার ব্যবহৃত সব কিছু যাচাই করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE