Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

যুবতীর মৃত্যু, পিংলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত বাড়ছে

ফের আরও এক জন তরুণীর মৃত্যু হল পিংলার মালিগ্রামের আগরআড়া গ্রামে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জ্বরেই মৌসুমী মাইতি (২২) নামে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তবে জ্বরের ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা। যদিও মৃতের পরিজনেদের দাবি, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

মৌসুমী মাইতি। নিজস্ব চিত্র

মৌসুমী মাইতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পিংলা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০১:১৯
Share: Save:

ডেঙ্গি আক্রান্ত ২১ ছুঁয়েছে। পিংলায় জ্বরে ভুগে দিন কয়েক আগে এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছে। ফের আরও এক জন তরুণীর মৃত্যু হল পিংলার মালিগ্রামের আগরআড়া গ্রামে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জ্বরেই মৌসুমী মাইতি (২২) নামে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তবে জ্বরের ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা। যদিও মৃতের পরিজনেদের দাবি, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

গত বছর জেলার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৪০ জন। এর মধ্যে খড়্গপুর শহরেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৬ জন। পিংলায় ১৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বার এখনও পর্যন্ত জেলার ৬৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। তার মধ্যছে ২১ জনই পিংলার বাসিন্দা। গত ৮ অগস্ট পিংলার ক্ষীরাই ঘোড়ামারা গ্রামের উৎপল খাঁড়া নামে বছর পঁয়ত্রিশের এক যুবকের মৃত্যু হয়। উৎপলের বাবা নারায়ণ খাঁড়া দাবি করেছিলেন, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে পেশায় কোয়াক ডাক্তার তাঁর ছেলের। যদিও তার ডেঙ্গি হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।

ওই তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ খানেক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন মৌসুমীও। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় এক কোয়াক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বৃহস্পতিবার ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

মৃতার স্বামী মুকুন্দ মাইতির দাবি, ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে কোনও চিকিৎসা হয়নি। ক্রমে আমার স্ত্রীর অসুস্থতা বাড়ছিল। শুক্রবার ওকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রেফার করা হলেও নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি ছিল না। মেদিনীপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করি। সেখানেই ওঁর মৃত্যু হয়। কোয়াক ডাক্তার রক্ত আমার স্ত্রীর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান-সহ স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদল শুক্রবার পিংলার মালিগ্রামে যায়। তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা। তৃণমূলের বুথ সভাপতি সুভাষচন্দ্র দাস বলেন, “সত্যি বলতে জ্বরে আক্রান্ত বাড়লেও এতদিন এলাকায় মশা মারতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মানুষের মৃত্যুর পরে এতকিছু হচ্ছে। আশা কর্মীদের কাছে সামান্য ওআরএস-ও নেই!”

স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ দাস, পঙ্কজ মাইতিদের অভিযোগ, “মশার উপদ্রবে নাজেহাল। কিন্তু মশা মারতে তো নিয়মিত অভিযান নেই।” সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, “ওই এলাকায় অনেকে জ্বরে ভুগছে। মৃত্যুও হয়েছে। আমি ও বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে দেখতে বলেছি। প্রতিটি বাড়ি থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার আবেদন জানিয়েছি।”

এ দিন অবশ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করেছি। সাধারণ মানুষ যাতে কোয়াক ডাক্তারদের উপর নির্ভর না করে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ডেবরা সুপার স্পেশালিটিতে ভাল চিকিৎসা হচ্ছে। তবে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE