Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কেশপুরের খুনে ধৃত তৃণমূলের ৭

কেশপুরে যুবক খুনের ঘটনায় ৭ তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার ধৃতদের মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতদের ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনাটি ঠিক কী তা জানার চেষ্টা হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৯
Share: Save:

কেশপুরে যুবক খুনের ঘটনায় ৭ তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার ধৃতদের মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতদের ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনাটি ঠিক কী তা জানার চেষ্টা হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগে এই গ্রেফতার। কেশপুরের ঘটনার তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

শুক্রবার সকালে কেশপুরের গোলাড়ের কেঁওসায় অশান্তি হয়। খুন হন চিত্ত ভুঁইয়া নামে এক যুবক। চিত্ত তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। ওই অশান্তিতে জড়িয়ে চিত্ত মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন। কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকালে কেঁওসায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষও হয়। স্থানীয় এক সূত্রের দাবি, সংঘর্ষের সময়ই মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন চিত্ত। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, রাজনৈতিক সংঘর্ষের কোনও ঘটনা ঘটেনি। পারিবারিক বিবাদে একটা গোলমাল হয়েছিল। সেই গোলমালে জড়িয়ে গিয়েছিলেন চিত্ত। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি করেন, কেশপুরের ঘটনাটি পারিবারিক সমস্যা। গ্রাম্য বিবাদ। ঘটনার সঙ্গে সরাসরি দলের যোগ নেই।

যদিও এই ঘটনায় ধৃত মদন ভুঁইয়া, ভুতা চৌধুরী-সহ সকলেই এলাকায় তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই পরিচিত। বিরোধীদের প্রশ্ন, ঘটনাটি যদি ‘গ্রাম্য বিবাদ’-ই হয়, গাতলে কেন তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতার করা হল। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলছেন, “পুলিশ পুলিশের কাজ করবে।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “কেউ অপরাধ করলে তার শাস্তি হবে।” দলের অন্য এক নেতার কথায়, “আমরা কাউকে আড়াল করব না।”

খুনের ঘটনার পরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে কেঁওসা-সহ গোলাড়ের বিভিন্ন এলাকায়। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে বলেও অভিযোগ। কেঁওসার এই অশান্তির জন্য দলের একাংশের অভিযোগের তির তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের দিকে। দলের ওই অংশের দাবি, বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়েছিলেন সঞ্জয়বাবু। অঞ্চল সভাপতি বদলে দেবেন বলে তিনি জানিয়ে এসেছিলেন। এরপরই গোষ্ঠী কোন্দল মাথাচাড়া দেয়। শনিবার বিকেলে মেদিনীপুরে তৃণমূলের জেলা কমিটির সভা ছিল। সেই সভাতেও কেশপুরের অশান্তির প্রসঙ্গ ওঠে। সভায় ছিলেন কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা। শিউলিদেবীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, সঞ্জয় পান নিজের মতো করে দল চালাচ্ছেন। কারও কথা শুনছেন না। বৈঠকে কেশপুরের প্রসঙ্গ যে আলোচনা হয়েছে তা মানছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। অজিতবাবু বলেন, “যে মারা গিয়েছেন তাঁর পরিবারের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল। বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছি, কোনও রকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। এ দিন কেশপুরের নেতৃত্বকে নিয়ে আলোচনাও করেছি। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছি।” দলের এক সূত্রে খবর, সঞ্জয় পানের সঙ্গে বিধায়ক শিউলিদেবীর সম্পর্ক ভাল নয়। শনিবার কেশপুরে বিধায়কের অফিস বন্ধও ছিল। কেঁওসার অশান্তির জন্যই কি বিধায়ক অফিস বন্ধ হয়েছে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলেন, “এ দিন কোনও কারণে হয়তো অফিস বন্ধ ছিল। এটা এমন কোনও ব্যাপার নয়। দলের মধ্যে কোনও কোন্দল নেই।”

শনিবারও কেঁওসার পরিস্থিতি ছিল থমথমে। ফের গোলমাল এড়াতে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Murder Case Keshpur TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE