Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৯২
Dengue

সর্বত্র সমান সাফাই কই, ক্ষোভ শহরে

আর অন্য ওয়ার্ড অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। পরিচ্ছন্নতা-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে শহরে গড়া হয়েছে নজরদারি কমিটি। রয়েছে টাস্ক ফোর্সও। যদিও কমিটি অধিকাংশ এলাকায় লোক দেখানো পরিদর্শন করছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

অস্বাস্থ্যকর: আবর্জনায় ছেয়েছে রেল আবাসন। ঘুরে বেড়াচ্ছে শুয়োরও। খড়্গপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে।  ছবি: দেবরাজ ঘোষ

অস্বাস্থ্যকর: আবর্জনায় ছেয়েছে রেল আবাসন। ঘুরে বেড়াচ্ছে শুয়োরও। খড়্গপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫০
Share: Save:

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্ত আর মশাবাহী এই রোগে মৃতের সংখ্যা। খড়্গপুরে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে খড়্গপুরে ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন দু’জন। আক্রান্ত ৭০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯২জন।

খড়্গপুর শহরে ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্ত সত্ত্বেও এলাকার পরিচ্ছন্নতায় রেল এবং পুরসভা, দু’পক্ষই উদাসীন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার খড়্গপুর পুরসভায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয় বামেরা। অভিযোগ, শুধুমাত্র যে ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেখানে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের অভিযান হচ্ছে। আর অন্য ওয়ার্ড অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। পরিচ্ছন্নতা-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে শহরে গড়া হয়েছে নজরদারি কমিটি। রয়েছে টাস্ক ফোর্সও। যদিও কমিটি অধিকাংশ এলাকায় লোক দেখানো পরিদর্শন করছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

গত ২৬ অগস্ট ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নিমপুরা দুর্গামন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের প্রিয়াঙ্কা সাউয়ের। বুধবার ফের ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয় ১৮ নম্বর রেল ওয়ার্ডের নিউ সেটেলমেন্ট এলাকার বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের প্রাক্তন সেনাকর্মী নিমাই বৈতালিকের। দু’টি ঘটনাতেই মৃত্যুর পরে তৎপর হতে দেখা গিয়েছে ডেঙ্গি নজরদারি কমিটিকে। প্রিয়াঙ্কার মৃত্যুর পরে ১২ নম্বর ওয়ার্ড পরিদর্শন করেছিলেন ডেঙ্গি টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার। তিনিও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, মৃতার বাড়ি সংলগ্ন এলাকাতেই পরিচ্ছন্নতায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের বাকি অংশে অভিযান হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় মোদক বলছিলেন, “মহকুমাশাসক সমালোচনা করার পরে পুরসভা দেখছি একটু নড়ে বসেছে। দুর্গামন্দির সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চলছে। কিন্তু নিমপুরার মূল সড়কের দু’ধারে ও উত্তর দিকে কোনও অভিযান চোখে পড়ছে না।”

নিমাই বৈতালিকের মৃত্যুর পরে এ দিন নিউ সেটেলমেন্টের প্রিন্টিং প্রেস সংলগ্ন এলাকায় সাফাই অভিযান চলে, পৌঁছন নজরদারি কমিটির সদস্যরা। ছিলেন পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পুর-পারিষদ বেলারানি অধিকারী, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর প্রদীপ দাস, কাউন্সিলর পূজা নায়ডু। দেখা যায়, যত্রতত্র জমে রয়েছে আবর্জনা। ছোট ছোট ভ্যাটে জমছে জল। নিমাইবাবু যে কোয়ার্টারে থাকতেন, তার চারপাশেও আবর্জনা জমে ছিল, বাড়ির পিছনে সেপটিক ট্যাঙ্ক ভাঙা। সেখান থেকেই আসছে মশা। ওই কোয়ার্টারের বাসিন্দা বি রাজা রাও বলেন, “তিন-চারদিনে একবার আবর্জনা পরিষ্কার হয়। খুব ভয়ে আছি।”

স্থানীয় কাউন্সিলর পূজার নালিশ, “আমাদের এলাকায় রেল কোনও কাজ করছে না। আমার কাছে পুরসভার তিনজন শ্রমিক। আর আমি নিজে দু’জনকে নিয়েছি। তারা কী এত বড় এলাকা রোজ পরিষ্কার করতে পারে!” পুর-পারিষদ বেলারানিদেবীও দায় চাপিয়েছেন রেলের ঘাড়েই। তবে রেলের জনস্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ সুপারিন্টেনডেন্ট জয়ন্ত মুর্মু বলেন, “ভ্যাট থেকে আবর্জনা তোলার বিষয়টি একটি এজেন্সিকে দেওয়া রয়েছে। তারা তিন দিন অন্তর আবর্জনা তোলে। সেই চুক্তি তো বদলানো যাবে না। তবে আমরা আমাদের এলাকায় মশা মারার তেল, ব্লিচিং দিচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE