মাঠে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর ও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে এ বারও ‘জঙ্গলমহল উৎসব’ হচ্ছে ঝাড়গ্রাম শহরের ঐতিহ্যবাহী কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন স্কুলের মাঠে। উৎসবের পর প্রতি বছরই মাঠটির দফারফা হয়ে যায়। গত বছর মাঠ ভর্তি পেরেক সাফ করতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষকে। মাঠ-সমস্যায় স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বাছাইপর্বের খেলাগুলিও পিছিয়ে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। কিন্তু হেলদোল নেই প্রশাসনের।
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি হলেন ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব। দুর্গেশবাবু আবার ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতিও। ফলে, মাঠ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না কেউই। একাংশ অভিভাবক অবশ্য বলছেন, রাজ্যে উৎসব-পার্বণের জন্য কোটি টাকা খরচ করে থাকে রাজ্য সরকার। ঝাড়গ্রামে উৎসবের জন্য একটি প্রাঙ্গণ তৈরি করা হলেই তো সমস্যা মিটে যায়। অন্তত ঐতিহ্যবাহী স্কুলের মাঠটি রক্ষা পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বললেন, ‘‘প্রতি বছর উৎসবের নাম করে স্কুলের স্বাভাবিক কাজকর্মও বন্ধ রাখা হয়। পঠনপাঠনের দিন-সংখ্যা কমে যায়। ক্ষতি তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের!’’
এ বারও উৎসবের মঞ্চ ও বিভিন্ন স্টলের জন্য গোটা মাঠ খুঁড়ে ফেলা হয়েছে। পোঁতা হয়ে গিয়েছে বাঁশের খুঁটিও। গত বছর ছিল পাঁচ দিনের উৎসব। এ বার তা বেড়ে আট দিন হয়েছে। ৩ জানুয়ারি মেদিনীপুরে পুলিশের একটি অনুষ্ঠান থেকে জঙ্গলমহল উৎসবের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে উৎসব চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। জঙ্গলমহলের তিন জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে কয়েকশো লোকশিল্পী যোগ দেবেন। সে জন্য কুমুদকুমারী স্কুলের একাধিক ক্লাস ঘর ইতিমধ্যেই দখল করে ফেলেছে প্রশাসন। ঝাড়গ্রামের এই বয়েজ স্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হয়। এ ছাড়া রয়েছে বৃত্তিমূলক শিক্ষাও। ছাত্রসংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। স্কুল কর্তৃপক্ষ চুপ করে থাকলেও পড়ুয়াদের একাংশও বলছে, “মেলার জন্য বিকল্প জায়গা
খুঁজুক প্রশাসন।”
স্কুলের সভাপতি তথা ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব অবশ্য মনে করেন, মাঠের তেমন ক্ষতি হবে না। দুর্গেশবাবু বলেন, “উৎসবের পরে আগামী বর্ষায় সংশ্লিষ্ট দফতর মাঠটি সারিয়ে দেবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy