বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে রমেশ ও সঞ্চিতা। —নিজস্ব চিত্র।
বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী পড়ার সময় অমরত্বের কথা শুনেছিলেন। যা নাড়া দিয়েছিল কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের কুশবনি গ্রামের রমেশ করমহাপাত্রকে। বাস্তবে অমর হওয়া যায় না। কিন্তু অঙ্গদান করে মৃত্যুর পরেও তো বেঁচে থাকা যায়! সেই ইচ্ছাপূরণ করতেই নিজের বিবাহবার্ষিকীতে সস্ত্রীক দেহদানের অঙ্গীকার করলেন রমেশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে কাঁথিতে একটি মরণোত্তর অঙ্গদান এবং দেহদানের অঙ্গীকার শিবিরের আয়োজন করা হয়। মোট ৪২ জন ব্যক্তি ওই শিবিরে অঙ্গীকার করেন। সেখানেই অন্যদের সঙ্গে অঙ্গীকার করেন রমেশ এবং তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা কর মহাপাত্র। এ দিনের অঙ্গদানকারীদের তালিকায় রয়েছেন কাঁথির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুমন বিশ্বাস।
২০১৬ সালে বিয়ে হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী রমেশের। দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকীতে দেহদানের শিবিরেই স্ত্রীর সঙ্গে কেক কাটেন তিনি। রমেশ বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় মরণোত্তর চক্ষু ও অঙ্গ দানের শিবিরের কথা জানতে পারি। তখনই সিদ্ধান্ত নিই যে, অঙ্গদানের মাধ্যমেই আমরা স্বামী-স্ত্রী অমর হয়ে থাকব।’’ সঞ্চিতা বলেন, “ওর প্রস্তাব শুনেই রাজি হয়েছিলাম। আমাদের চোখ, কিডনি বা হৃদপিণ্ড অন্য কাউকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে। তাঁদের মাধ্যমেই আমরা অমর হয়ে থাকব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিবাহ বার্ষিকী অনেকে বেড়াতে বা রেস্তোরাঁয় গিয়ে উদযাপন করেন। আমরা এভাবেই দিনটি পালন করলাম।’’
কাঁথির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুমন বিশ্বাসও এ দিন দেহদানের অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে কারও কারও মনে ভুল ধারণা রয়েছে। সমাজের এমন ভাল কাজের জন্য সকলের এগিয়ে আসা উচিত। এছাড়া, দেহদানের ভাবনাটা বেশ কিছুদিন ধরে আমার মনে হয়েছিল। আজ সুযোগ পেয়ে তার সদ্ব্যবহার করলাম।’’ অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু, নৃত্যশিল্পী মনীশ সামন্ত প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy