অসুস্থ কাউকে ভর্তির আগে এখন আত্মীয়-পরিজনদের মনে ঘুরপাক খায় হাজারো প্রশ্ন— নার্সিংহোমটি বৈধ তো, যে ডাক্তারবাবুরা রয়েছেন তাঁরা জাল নন তো, খরচই বা কত!
একের পর এক ভুয়ো চিকিৎসকের হদিস আর বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমে বাড়তি টাকা নেওয়ার নালিশ— এই সাঁড়াশি চাপে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। অবস্থা দেখে একটি পোর্টাল চালু করতে চলেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। নার্সিংহোমগুলির লাইসেন্স নম্বর, চিকিৎসকদের তালিকা ও তাঁদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিভিন্ন অসুখে চিকিৎসার খরচ— বিস্তারিত সব তথ্যই থাকবে এই পোর্টালে।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘ভুয়ো চিকিৎসক দিয়ে নার্সিংহোম চালানো আর রোগীদের থেকে নানা অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া বন্ধ করতেই এই পোর্টাল চালু করা হচ্ছে। এর ফলে, জেলার বিভিন্ন এলাকার থাকা নার্সিংহোমগুলি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য চাইলেই জানা যাবে।’’
জেলার ভগবানপুরে ইতিমধ্যে এক ভুয়ো চিকিৎসক গ্রেফতার হয়েছে। জেলাশাসকের মতে, এই পোর্টালে নার্সিংহোমের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকের নাম, তিনি কোন রোগের বিশেষজ্ঞ, তাঁর রেজিস্ট্রেশন নম্বর-সহ যাবতীয় তথ্য যাচাই করে দেওয়া হবে বলে ভুয়ো চিকিৎসক ধরা সুবিধা হবে। সেই সঙ্গে কোনও চিকিৎসক বা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও সুবিধা হবে। পোর্টাল চালুর পাশাপাশি জেলার প্রতিটি নার্সিংহোমে চিকিৎসকের তালিকা ও খরচের প্যাকেজ সম্বলিত তথ্য টাঙাতে হবে বলেও নির্দেশ জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়মে রাশ টানতে কড়া পদক্ষেপ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চালু হয়েছে ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট’। নিয়ম মেনে নার্সিংহোম-বেসরকারি হাসপাতাল চালানো বাধ্যতামূলক করতে তৎপর হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও। বর্তমানে এই জেলায় মোট ১৩১ টি নার্সিংহোম বৈধভাবে চলছে। লাইসেন্স ছাড়া অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণ লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করায় সম্প্রতি জেলার ৪৩টি নার্সিংহোম বন্ধের নোটিস দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কয়েকমাস আগে জেলা স্বাস্থ্য দফতর বৈঠক ডেকে নার্সিংহোম মালিকদের জানিয়ে দিয়েছে, উপযুক্ত পরিকাঠামো, চিকিৎসক, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী রাখতেই হবে। এ নিয়ে আগামী শুক্রবার তমলুকে ফের জেলার নার্সিংহোম মালিকদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
এ সবের পাশাপাশি পোর্টাল চালু হলে গোটা প্রক্রিয়ায় দ্রুত স্বচ্ছতা আসবে বলেই সকলের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy