Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

চা দোকানেও পেটিএম

মাছ, রোল, ফুচকার পর এ বার চায়ের দোকান! ধারের ফাঁদে পা দিতে নারাজ পরমেশ্বর সিংহ। তাহলে উপায়? পেটিএম রয়েছে তো। তাই নোটের চোটে বেসামাল না হয়ে মেদিনীপুরে দিব্যি চা দোকান চালাচ্ছেন পরমেশ্বর। তাঁর কথায়, ‘‘এই পদ্ধতিতে কোনও ঝামেলা নেই। খুব সহজেই লেনদেন সম্ভব। খুচরো নিয়ে সমস্যাও হবে না।”

খুচরোর আকালেও দিব্যি চলছে বিকিকিনি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

খুচরোর আকালেও দিব্যি চলছে বিকিকিনি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০৪
Share: Save:

মাছ, রোল, ফুচকার পর এ বার চায়ের দোকান! ধারের ফাঁদে পা দিতে নারাজ পরমেশ্বর সিংহ। তাহলে উপায়? পেটিএম রয়েছে তো। তাই নোটের চোটে বেসামাল না হয়ে মেদিনীপুরে দিব্যি চা দোকান চালাচ্ছেন পরমেশ্বর। তাঁর কথায়, ‘‘এই পদ্ধতিতে কোনও ঝামেলা নেই। খুব সহজেই লেনদেন সম্ভব। খুচরো নিয়ে সমস্যাও হবে না।”

মেদিনীপুর শহরে জেলা পরিষদ রোডের অদূরে চা দোকান রয়েছে পরমেশ্বরের। রাস্তার পাশে ঘুপচি দোকান। দোকানে চায়ের পাশাপাশি রুটি-ঘুগনি, ছোলা-মুড়িও মেলে। প্রায় দু’দশক ধরে এখানে ব্যবসা করছেন তিনি। তাঁর আদি বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। শহরে এসে প্রথমে ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এখন অবশ্য তোড়াপাড়ায় নিজের বাড়ি করেছেন। নোট বদলের পর কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি পরমেশ্বরকে। শহরে তিনি ‘জিজা’ নামেই পরিচিত।

পরমেশ্বরের কথায়, “খুচরো নিয়ে সমস্যা হয়েছে। ৩০-৪০ টাকার মেটাতে অনেকে ১০০ টাকা ধরিয়ে দেন। ৬০-৭০ টাকা খুচরো দেব কী করে?” পরে তিনি বলেন, “পেটিএমের কথা শুনেছিলাম। সব দিক দেখে মনে হল, এটা মন্দ নয়! এই পরিষেবা চালু করলে খদ্দেরদেরও সুবিধা হবে।” পরমেশ্বরের চা দোকানে রোজই আসেন অয়ন মাইতি, অরূপ দাসরা। অয়ন বলছিলেন, “এ বার মোবাইলে ওই অ্যাপ ডাউনলোড করে নেবো। তাহলে আর এখানে নগদ লেনদেনের ব্যাপার থাকবে না।”

পেটিএমের ব্যবহার ঠিক কী রকম? পেটিএম ব্যবহার করতে হলে ক্রেতাকে তাঁর অ্যানড্রয়েড মোবাইলে পেটিএম অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। সেটি আদপে একটি মোবাইল ওয়ালেট। নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মোবাইলেই পেটিএম ওয়ালেটে টাকা ভরা যাবে, ঠিক যেমন মোবাইল রিচার্জ করা হয়। ক্রেতার পেটিএম ওয়ালেট থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিক্রেতার ওয়ালেটে চলে যাবে টাকা। টাকার হাতবদল তো দূরের কথা, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড পর্যন্ত লাগবে না এই ব্যবস্থায়। মানিব্যাগ বাড়িতে ফেলে এলেও সমস্যা নেই। মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায়ও মানছেন, “যুগের সঙ্গে তাল মেলাতেই হবে। পেটিএম ব্যবহার করলে খদ্দের, বিক্রেতা সকলেরই সুবিধা।”

আগে মেদিনীপুরের মতো মফস্‌সলের শহরে পেটিএম ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম ছিল। চা দোকানে পেটিএমে টাকা দেওয়ার কথা তো ভাবাই যেত না! নোটের চোটে এ বার এখন চা- দোকানেও মোবাইল লেনদেন শুরু হচ্ছে। পরমেশ্বর বলছিলেন, “ধার বাকি না রেখে এ ভাবে নগদে ব্যবসা হলে তো ভালই!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Paytm tea shop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE