Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নরেন্দ্রপুরের আদলে প্রার্থনা ঘর একলব্যে

আদিবাসী পড়ুয়াদের দাবি মেনে রামকৃষ্ণ মিশনের আদলে প্রার্থনা ঘর সাজানো হল ঝাড়গ্রামের একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ে। সেখানে শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদামণি ও স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে একই সারিতে আদিবাসীদের পবিত্র জাহের থানের ছবিও রয়েছে।

নতুন প্রার্থনা ঘর। —নিজস্ব চিত্র।

নতুন প্রার্থনা ঘর। —নিজস্ব চিত্র।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০২:০৭
Share: Save:

আদিবাসী পড়ুয়াদের দাবি মেনে রামকৃষ্ণ মিশনের আদলে প্রার্থনা ঘর সাজানো হল ঝাড়গ্রামের একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ে। সেখানে শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদামণি ও স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে একই সারিতে আদিবাসীদের পবিত্র জাহের থানের ছবিও রয়েছে। প্রকাণ্ড প্রার্থনা ঘরটির দেওয়ালে সব ধর্মের মণীষীদের সঙ্গে রয়েছে অলচিকি লিপির স্রষ্টা পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু ও সাঁওতালি সাহিত্যের মহাকবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর ছবিও।

গত জানুয়ারিতে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের আওতাধীন সরকারি এই স্কুলটির পরিচালনার দায়িত্ব বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছ’মাসের মধ্যে স্কুলের ভোল বদলে গিয়েছে। বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত স্বামী শুভকরানন্দের তত্ত্বাবধানে আবাসিক স্কুলটিকে আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উত্তরণের জন্য পরিশ্রম করে চলেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে শুভকরানন্দ অবশ্য শান্তনু মহারাজ নামে পরিচিত। ইতিমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের বেলুড় ও নরেন্দ্রপুর ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ বিদ্যালয়ের প্রার্থনা ঘরটিকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় একলব্যের আবাসিকরা। স্কুলের টিচার-ইনচার্জ নৃপেন টুডু বলেন, “নরেন্দ্রপুরের প্রার্থনা ঘর দেখে এসে পড়ুয়ারাও ওই রকম পরিবেশের প্রার্থনা ঘর চেয়েছিল। শান্তনু মহারাজের (স্বামী শুভকরানন্দ) কাছে এ ব্যাপারে সরসারি আবেদন করেছিল ছাত্রছাত্রীরা। দু’সপ্তাহের মধ্যে মিশন কর্তৃপক্ষ ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসের দু’টি পুরনো প্রার্থনা ঘরকে মনোরম পরিবেশে সাজিয়ে দিয়েছেন।”

স্কুলের ছাত্রাবাস শ্রদ্ধাভবনের দোতলায় প্রার্থনা ঘরটিতে মিশনের ধূপের গন্ধ। কাঠের বেদির উপরের পেলমেট থেকে ঝুলছে গৈরিক রঙের পিছন-পর্দা। বেদির উপর শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদামণি, স্বামী বিবেকানন্দ, জাহের থান ও সরস্বতীর ছবি সাজানো রয়েছে। বসার জন্য গৈরিক রঙের কার্পেট পাতা। জানা গেল, নরেন্দ্রপুর মিশন কর্তৃপক্ষ একলব্যের জন্য একাধিক কার্পেট উপহার দিয়েছেন। মেয়েদের হস্টেল শ্রীভবনেও একই ধরনের পৃথক প্রার্থনা ঘর
সাজানো হয়েছে।

নবম শ্রেণির সুমিতাভ হেমব্রম, অমৃত সরেন, দশম শ্রেণির মনোজ বাস্কে, সুকান্ত মুর্মু, বিশ্বনাথ টুডু-রা জানায়, “পুরনো প্রার্থনা ঘরে আগে কেবল শতরঞ্চি পাতা থাকত। আর কিছু ছিল না। গত কয়েক মাসে স্কুলের চেহারাটাই বদলে গিয়েছে। প্রার্থনা ঘরটি সাজানোই কেবল বাকি ছিল। মহারাজকে সে কথা জানিয়ে নরেন্দ্রপুরের মতো প্রার্থনাঘর সাজানোর অনুরোধ করেছিলাম। এখন প্রার্থনা ঘরটিতে ঢুকলে মনে হচ্ছে আমরা যেন নরেন্দ্রপুরে আছি!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Mamata Banerjee Ramkrishna mission school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE