Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ঘাটাল তত উন্নত নয়, বলছেন পুরপ্রধান

দেবের তৈরি প্রতীক্ষালয়ে চলেনি এসি

গত সাত মাসে চেয়ার ভেঙেছে বেশ কয়েকটি। নেত্রী ও সাংসদের ছবিতে কে বা কারা পানের পিক ফেলে গিয়েছে। নোংরা হয়ে রয়েছে গোটা প্রতীক্ষালয়টি।

বেহাল: ভেঙে পড়েছে চেয়ার। যত্রতত্র পানের পিক। অকেজো বাতানুকূল যন্ত্র। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

বেহাল: ভেঙে পড়েছে চেয়ার। যত্রতত্র পানের পিক। অকেজো বাতানুকূল যন্ত্র। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০১:১৯
Share: Save:

পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন দেব। সাংসদ তহবিলের সেই টাকায় তৈরি হয়েছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রী প্রতীক্ষালয়। ঘাটাল শহরের হাসপাতাল মোড়ে চলতি বছর মার্চ মাসে উদ্বোধন হয়েছিল সেই প্রতীক্ষালয়ের। ভিতরে সার দেওয়া চেয়ার। মুখ্যমন্ত্রী ও সাংসদের ছবি টাঙানো।

গত সাত মাসে চেয়ার ভেঙেছে বেশ কয়েকটি। নেত্রী ও সাংসদের ছবিতে কে বা কারা পানের পিক ফেলে গিয়েছে। নোংরা হয়ে রয়েছে গোটা প্রতীক্ষালয়টি। তবে ভিতরে একদিনও ঠান্ডা হাওয়া পাননি যাত্রীরা। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় কোনও দিন চালুই করা যায়নি দু’টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র।

কেন এমন হল?

ঘাটালের পুরপ্রধান বিভাস ঘোষের সাফ কথা, “এসি যাত্রী প্রতীক্ষালয় চালু রাখার মতো উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিকাঠামো এখানে নেই। ঘাটাল এখনও এত উন্নত হয়নি।’’

অথচ, এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মেনেই ঘাটালের সাংসদ, অভিনেতা দীপক অধিকারীর সাংসদ তহবিলের টাকায় তৈরি হলেও ওই যাত্রী প্রতীক্ষালয় রক্ষণাবেক্ষণের ভার ছিল পুরসভার উপর।

অভিযোগ, গত কয়েক মাসে ওই প্রতীক্ষালয়ে একজন রক্ষীও নিয়োগ করতে পারেনি পুরসভা। হয়নি বিদ্যুৎ সংযোগ। সারাদিন রাত খোলাই পড়ে থাকে কাচের দরজা। ভিতরে জমছে প্লাস্টিকের প্যাকেট, চায়ের ভাঁড়। স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনও দিন পরিষ্কারও করা হয় না সে সব। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

ঘাটাল কলেজের এক ছাত্রী রীতা বসাকের আক্ষেপ, “গ্রীষ্ম কালেই চালু হয়েছিল এই প্রতীক্ষালয়। কিন্তু ভ্যাপসা গরম, চড়া রোদে দু’দণ্ড জিরিয়ে নেওয়ার উপায়টুকু রাখা হয়নি। সে দায় তো পুরসভার।’’

তবে শুধু এই প্রতীক্ষালয়টি নয়। একই পরিস্থিতি ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের বিধায়ক তহবিলের টাকায় সদ্য তৈরি ময়রাপুকুর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া প্রতীক্ষালয়টিরও। নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় সেখানে বসার পরিবেশ নেই।

ইতিমধ্যেই ভেঙে গিয়েছে চেয়ারগুলি। ঘাটালের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের প্রতীক্ষালয়েরও একই হাল। সেখানে নেই পর্যাপ্ত আলো এবং পাখা। সাফাইয়ের বালাই নেই। যাত্রীদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যে এমনই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে ওই প্রতীক্ষালয়ের ভিতরে দাঁড়িয়ে থাকারও উপায় থাকে না। অথচ, প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয় কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে। বেহাল কুশপাতা বাসস্টপ সংলগ্ন প্রতীক্ষালয়টিও।

অথচ যত দিন যাচ্ছে শহরে বাসের সংখ্যা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যাত্রীও। কিন্তু নিয়মিত প্রতীক্ষালয়গুলিকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার বিষয়ে কোনও হেলদোলই নেই ঘাটাল পুরসভার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

AC Bus stop Ghatal Dev
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE