করজোড়ে: বিদ্যাসাগরের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইছেন বীরসিংহের বাসিন্দারা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
জন্মদিন কিংবা মৃত্যুদিন ছাড়া এ দিকে তেমন ফুল, মালা আসে না! তবে বুধবার এল। দিনের শেষে ফুল, মালায় রীতিমতো ঢেকে গিয়েছিল মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে বিদ্যাসাগরের পূর্ণাবয়ব মূর্তি।
২৬ সেপ্টেম্বর বিদ্যাসাগরের জন্মদিন ও ২৯ জুলাই বিদ্যাসাগরের মৃত্যুদিনে মূর্তির সামনে কিছু কর্মসূচি হয়। এ ছাড়া এই তল্লাটে তেমন জমায়েত চোখে পড়ে না। শহরে বেশিরভাগ অবস্থান-বিক্ষোভ জেলা পরিষদ রোডে গাঁধীমূর্তির পাদদেশ কিংবা কালেক্টরেট মোড়ে ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে হয়। বুধবার অবশ্য দিনভর এলআইসি মোড় ছিল সরগরম। বিভিন্ন সংগঠন বিদ্যাসাগরকে স্মরণ করে গিয়েছে। সঙ্গে এনেছিলেন ফুল, মালা। তৃণমূল এখানে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি করেছে। ছিলেন মানস ভুঁইয়া, অজিত মাইতিরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘বিজেপির লোকেরা মূর্তি ভেঙেছে। কোনও রাজনৈতিক দলের এ রকম হাঙ্গামা কখনও দেখিনি।’’ বিজেপির জেলা সম্পাদক অরূপ দাসের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকজনই মূর্তি ভেঙেছে। সহানুভূতি আদায়ের জন্য বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে।’’
বিপ্লবের শহর মেদিনীপুর ঐতিহ্যের শহরও বটে। শহিদদের পাশাপাশি এখানে মনীষীদের মূর্তিও রয়েছে। অবশ্য সে সব মূর্তি জুড়ে বছরভর শুধুই অবহেলা আর অনাদরের ছাপ লক্ষ্য করা যায়। জন্মদিন আর মৃত্যুদিনে বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের তরফে মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়। পরে সেই শুকনো মারা সরানোর জন্য লোক খুঁজে পাওয়া যায় না! এলআইসি মোড়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তির অবস্থাও তাই থাকে। তবে বুধবার সেই ট্র্যাডিশনে ব্যতিক্রম হল। কারণ জন্মের দ্বিশতবর্ষের ঠিক আগেই কলকাতায় ভাঙা পড়েছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি। সেই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে সারা বাংলা। পিছিয়ে নেই মেদিনীপুরও। এ দিন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ, ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের উদ্যোগে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। হয় প্রতিবাদ সভা। এসইউসি ও তার গণসংগঠনগুলি ধিক্কার দিবস পালন করেছে।
কিন্তু বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে দেওয়া ফুল, মালাগুলো শুকনো হলে এ বার সরানোর লোক মিলবে তো? উত্তর অধরাই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy