Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মালিকদের তালিকা তৈরি করছে গ্রাম পঞ্চায়েতের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল (ফোর ম্যান কমিটি)। সেই কমিটিই বৃহস্পতিবার পড়ল বিক্ষোভের মুখে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মালিকদের তালিকা তৈরি করছে গ্রাম পঞ্চায়েতের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল (ফোর ম্যান কমিটি)। সেই কমিটিই বৃহস্পতিবার পড়ল বিক্ষোভের মুখে।
ওই প্রতিনিধি দলে থাকেন সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, বিডিও মনোনীত প্রতিনিধি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোনীত প্রতিনিধি এবং বিরোধী দল নেতা বা নেত্রী। মঙ্গলবার কোলাঘাট ব্লকের খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পূর্ব সাওড়াবেড়িয়া গ্রামে ‘আমপানে’ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শনে যায় ওই কমিটি।
এ দিন দলীয় সদস্যদের দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসী। সদস্যদের ঘিরে চলতে থাকে বিক্ষোভ। গ্রামের মানুষের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, রেশন কার্ড তৈরি, একশো দিনের কাজ, আমপানের ত্রাণ বিলি— সব কিছুতেই খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুপ্রিয়া জানা স্বজনপোষণ করছেন। প্রকৃত দাবিদাররা বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিক্ষোভের মুখে পরে অবশ্য দলের সদস্যেরা চুপই থাকেন। স্থানীয় নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য চন্দনা মাজির অভিযোগ, ‘‘খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিজের দলের লোকেদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেন। আমার এলাকায় আমাকে না জানিয়ে তাঁর পছন্দের লোকেদের বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেন। প্রকৃত দাবিদাররা এখানে বঞ্চিত। তাই এলাকার মানুষ প্রতিনিধিদের সামনে পেয়ে বিক্ষোভ দেখান।’’
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে পঞ্চায়েতের প্রধান সুপ্রিয়া বলেন, ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের মাধ্যমেই এলাকার প্রকৃত দাবিদারদের পরিষেবা দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই বিক্ষোভ হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই পাঁশকুড়ার রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অজিত কুমার সামন্তের বিরুদ্ধেও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল। বিডিও’র কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরে ওই তালিকা বাতিল করে ব্লক প্রশাসন। এর পরে বুধবার পঞ্চায়েত অফিসের উল্টো দিকে একটি প্রতিবাদ সভা শুরু করেন অজিত। সেখানে তিনি দাবি করেন, সামনে সিপিএমকে রেখে বিজেপি তাঁকে অপদস্থ করার চেষ্টা করছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকায় স্বজনপোষণ হয়নি।
তবে অজিত যাই দাবি করুন, সম্প্রতি সামনে এসেছে ওই পুরনো তালিকা। তাতে দেখা গিয়েছে, প্রধানের শাশুড়ি, উপপ্রধানের স্বামী, পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলের নাম রয়েছে সেখানে। বিরোধীদের অভিযোগ, ছিল ওই ব্যক্তিদের কারও বাড়ি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আর অজিতের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য অঞ্জন মাইতি বলেন, ‘‘তৃণমূল সব কিছুতেই বিজেপির ভূত দেখেছে। ওঁর দুর্নীতি প্রমাণিত। এখন উপায় না দেখে ভুল বকছেন।
তালিকা ছাড়াও সামনে এসেছে ওই তালিকা তৈরির বিষয়ে পঞ্চায়েতের ডাকা একটি সভার প্রস্তাবনার প্রতিলিপি। তাতে উল্লেখ রয়েছে, ‘প্রধান মহাশয়ে’র কয়েকটি কোটা রেখে তালিকা তৈরি করতে হবে। ওই প্রস্তাবনায় অজিতের সইও ছিল।
পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনধূপ ভুটিয়া অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে ‘প্রধানের কোটা’ বলে কিছু হয় না। বিডিও’র নির্দেশে আপাতত ওই পঞ্চায়েতে ‘ফোর ম্যান কমিটি’ নতুন করে তালিকা তৈরি করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp cpim tmc amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE