Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দুই শিক্ষকই বদলি, হাজিরা নিয়ে ছুটি স্কুল

রেলশহরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে খড়্গপুর চক্রের ভারতী হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমন ঘটনা নজিরবিহীন বলেই শিক্ষা মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।

বন্ধ মিড ডে মিলের ঘর। ভারতী হিন্দি প্রাথমিক স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র

বন্ধ মিড ডে মিলের ঘর। ভারতী হিন্দি প্রাথমিক স্কুলে। —নিজস্ব চিত্র

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১৪
Share: Save:

স্কুলে ১০৪ জন পড়ুয়ার জন্য স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন দু’জন। সেই দুই স্থায়ী শিক্ষককেই বদলির নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। নতুন স্কুলে যোগও দিয়েছেন ওই দুই শিক্ষক। ফলে, তাঁদের স্কুলে পঠনপাঠন শিকেয়, বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড-ডে মিল!

রেলশহরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে খড়্গপুর চক্রের ভারতী হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমন ঘটনা নজিরবিহীন বলেই শিক্ষা মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ মিড-ডে মিল। কোনও রকমে পড়ুয়াদের হাজিরাটুকু নিয়ে স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এক সময়ে এই স্কুলে চারজন স্থায়ী শিক্ষক ছিল। ছিলেন দু’জন পার্শ্বশিক্ষক। বছর কয়েক আগে পুনমকুমার মিশ্র নামে একজন স্থায়ী শিক্ষককে অন্য স্কুলে সাময়িক বদলি করা হয়। খাতায়-কলমে পুনম এই স্কুলেই ছিলেন। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দুই শিক্ষক অবসর নেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন স্থায়ী শিক্ষক বিনয়কুমার শর্মা। তারপর দুই স্থায়ী শিক্ষক বিনয়কুমার শর্মা ও পুনমকুমার মিশ্রকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁদের যোগ দিতে হয়েছে সাউথ সাইড হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাতেই আতান্তরে পড়েছে ভারতী হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বৃহস্পতিবারও পড়ুয়াদের হাজিরা নিয়েই ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে স্কুল। পার্শ্বশিক্ষক নজরুল হক কুরেশি বলেন, “স্থায়ী শিক্ষক নেই। আমরা এত পড়ুয়া কী ভাবে সামলাব। মেদিনীপুরে অন্য কাজে যাচ্ছি। তাই স্কুল ছুটি দিয়ে দিয়েছি।” স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যাওয়া দ্বিতীয় শ্রেণির অনন্যা খটিক, লক্ষ্মী খটিকেরা বলছিল, “স্যারেরা না থাকায় ক্লাস হচ্ছে না, রান্নাও বন্ধ। না খেয়েই বাড়ি চলে যাচ্ছি।” ক্ষুব্ধ অভিভাবক রাজিয়া বানু, যোগেশ কুমাররা বলছেন, “এ ভাবে পার্শ্বশিক্ষক দিয়ে স্কুল চলে নাকি!” বদলি হয়ে যাওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিনয়কুমারের বক্তব্য, ‘‘স্কুলের এমন পরিস্থিতির কথা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েছি।”

শিক্ষা দফতরের দাবি, পুরনো নথির গোলমালের জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা বলেন, “আসলে পুরনো তথ্য অনুযায়ী ওই স্কুলে পার্শ্বশিক্ষক মিলিয়ে ৬জন শিক্ষক ছিল। সেই অনুযায়ী বদলি হয়েছে। তবে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে বলা হয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতি যাচাই করে নিতে। কিন্তু উনি যাচাই না করে বদলির নির্দেশ দেওয়ায় এই পরিস্থিতি হয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘আমরা একজন স্থায়ী শিক্ষককে ফিরিয়ে দেব।” আর অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌম্যজিৎ মাইতির ব্যাখ্যা, “৪ ফেব্রুয়ারি তড়িঘড়ি নির্দেশের প্রতিলিপি দিতে হয়েছে। সময় না পেলে যাচাই করব কী ভাবে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kharagpur School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE