প্রতীকী ছবি।
কালীপুজো-দীপাবলি এসেই পড়ল। সঙ্গে এল আশঙ্কা, শব্দদানবের দাপটে কান ঝালপালা হবে না তো! পুলিশ বারবার অভিযান, নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত, ধড়পাকড়ের কথা বললেও, বাস্তব হল নজরদারির ফাঁক গলেই মেদিনীপুর ও আশেপাশে প্রচুর শব্দবাজি ঢুকে পড়ছে। আর তাতেই বাড়ছে আশঙ্কা।
সপ্তাহ কয়েক আগে মেদিনীপুর শহরে, কোতোয়ালি থানা থেকে কিছুটা দূরে বাজি বিস্ফোরণে দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। তারপর ক’দিন নজরে এসেছিল পুলিশের অভিযান। তবে সে সব এড়িয়েই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন প্রান্তে দেদার নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরি হয়েছে বলে খবর। এবং সেখান থেকেই শহর মেদিনীপুরে ঢুকছে শব্দবাজি। খড়্গপুর গ্রামীণের মাওয়া, মেদিনীপুর গ্রামীণের ছেড়ুয়া, কেশপুরের অকুলথাঁড়া, গড়বেতার উত্তরবিল জেলার বাজি প্রস্তুতকারক এলাকা বলে পরিচিত। ছেড়ুয়া থেকে এ বার মেদিনীপুরে প্রচুর শব্দবাজি ঢুকেছে। অভিযোগ, গতবার ছেড়ুয়া ও আশেপাশের এলাকায় যে রকম পুলিশি নজরদারি ছিল, এ বার এখনও পর্যন্ত তেমন নেই। অনেকেই মেদিনীপুর থেকে ছেড়ুয়া গিয়ে শব্দবাজি কিনে এনেছেন। এঁদের মধ্যে ছোটখাটো ব্যবসায়ীর সংখ্যাই বেশি, যাঁরা শহরের মোড়ে মোড়ে বাজির দোকান দেবেন।
পুলিশের অবশ্য দাবি, ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর অবৈধ শব্দবাজি আটক করা হয়েছে। মেদিনীপুর ও আশেপাশের এলাকায়ও অভিযান হয়েছে। সর্বত্র নজরদারি চলছে। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষও বলেন, “অবৈধ শব্দবাজি নিয়ে অভিযোগ এলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আশা করি, মেদিনীপুরে এ বার শব্দবাজির সমস্যা হবে না।’’
কালীপুজো-দীপাবলির ক’দিন আগে থেকেই মেদিনীপুরে শব্দবাজির তাণ্ডব শুরু হয়ে যায়। দুপুর-সন্ধে-রাত, সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেদার শব্দবাজি ফাটে। রাত যত বাড়ে, শব্দতাণ্ডবও বাড়তে থাকে। আর এসবে আলো উত্সবের তালটাই যেন কেটে যায়। দু’বছর আগে পিংলা বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর অতি-তত্পর হয়েছিল পুলিশ। এ বার সেই তৎপরতা নেই। ফলে, বিকোচ্ছে চকোলেট-দোদমা।
শহরের এক প্রবীণ নাগরিক আবার বললেন, ‘‘শব্দ না হলেও এমন অনেক বাজি আছে যার ধোঁয়ায় দম আটকে আসে। দিল্লির মতো আইন করে এখানেও সে সব বন্ধ করা উচিত।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, “এ বারও সবক’টি থানা এলাকায় বেআইনি বাজির বিরুদ্ধে টানা অভিযান চলছে।’’ নিষিদ্ধ শব্দবাজি তৈরির অভিযোগ মানতে নারাজ ছেড়ুয়ার বাজি প্রস্তুতকারকরাও। ছেড়ুয়ার এক বাজি ব্যবসায়ীর কথায়, “বাজি তৈরি হয়েছে। শহর থেকে অনেকে এসে নিয়েও গিয়েছে। তবে সবই বৈধ বাজি।’’ মেদিনীপুরের একাংশ বাসিন্দার অবশ্য অভিজ্ঞতা, পাইকারি বাজারগুলো থেকে অবৈধ শব্দবাজি শহর-শহরতলির খোলা-বাজারে আসে। এ বার পুলিশ সে ভাবে পাইকারি বাজারগুলোয় হানা দেয়নি। ফলে, ‘সাপ্লাই-লাইন’ বন্ধ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy