প্রতীকী ছবি।
নালিশ চেয়ার নিয়েও।
মেয়াদ ফুরিয়েছে। নিয়মানুযায়ী, দফতরে আর বসতে পারেন না জেলা পরিষদের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষেরা। কিন্তু অভিযোগ, এখনও দফতরে আসছেন বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষদের অধিকাংশ। শুধু আসছেন না। এসে বসেছেন তাঁদের পুরনো চেয়ারেও। এ সব দেখে খোদ দলের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কাছে নালিশ ঠুকেছেন জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত এক সদস্য। নির্দিষ্ট এক বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই তাঁর অভিযোগ। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ কেন দফতরে এসে চেয়ারে বসবেন, কেন ফাইলপত্র দেখবেন, কেন অফিসারদের ডেকে কথা বলবেন—এমনই নানা অভিযোগ জমা পড়েছে জেলা সভাপতির কাছে। অভিযোগ পেয়েছেন? কোনও ব্যবস্থা নেবেন? জেলা সভাপতির সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘বিষয়টি দেখছি।’’
জেলা পরিষদে সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি নির্বাচন হয়েছে। এই দুই পদের ক্ষেত্রে পুরনো মুখেই আস্থা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাধিপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন উত্তরা সিংহ, সহ- সভাপতি পদেও পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন অজিত মাইতি। এ বার কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের পালা। স্থায়ী সমিতির সদস্যেরা নির্বাচিত করবেন কর্মাধ্যক্ষদের। এখনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, বিষয়টি মহালয়ের আগে মিটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বার এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেল কুর্সি কা কিস্সা।
খোদ জেলা সভাপতির কাছে নালিশ! অভিযোগকারী সদস্য নিশ্চয়ই ‘হেভিওয়েট’? তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, অভিযোগকারী জেলা পরিষদের সদস্যের সঙ্গে দলের প্রথম সারির এক নেতার না কি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। ওই সদস্যের না কি, এ বার জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষের পদও পাকা। কিন্তু দফতরে এসে চেয়ার বসে তো ফাইল দেখছেন তো অনেক বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ। তা হলে নির্দিষ্ট একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন? তৃণমূল সূত্রের খবর, অভিযোগকারী কোনও দফতরের কর্মাধ্যক্ষ হবেন তা-ও নাকি ঠিক হয়ে গিয়েছে। তাই ওই দফতরের বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন ওই ‘হেভিওয়েট’ নেতা। যা দেখেশুনে আরেক বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ বলেছেন, ‘‘এ তো দেখছি, চেয়ার পাওয়ার আগেই সামলানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষদের এখন আইনত কোনও ক্ষমতা নেই। তাই বিদায়ী হতেই কর্মাধ্যক্ষদের দফতরে যাওয়া রীতিবিরুদ্ধ। তা হলে কেন যাচ্ছেন? যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ‘কাজের প্রয়োজনে’ই দফতরে যাচ্ছেন তিনি। কী সেই কাজ? ওই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষের কথায়, ‘লোকের সঙ্গে দেখা করাটাও তো কাজ। তাই সাক্ষাৎপ্রার্থীদের দফতরেই আসতে বলি। জল যে এত দূর গড়াবে বুঝতে পারিনি।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, কর্মাধ্যক্ষ হতে শুরু হয়েছে ইঁদুর দৌড়। একটি পদের ক্ষেত্রে কোথাও দাবিদার দুই, কোথাও তিন। সবথেকে বেশি দাবিদার না কি পূর্তে। বাকি সব দফতরের থেকে এই দফতরের না কি পাল্লা ‘ভারী’। জেলা নেতৃত্বও চাইছেন বিষয়টি তাড়াতাড়ি মিটলেই ভাল। কে কে জেলা কর্মাধ্যক্ষ হবেন চূড়ান্ত হয়েছে? অজিত বলেন, “ফালতু কথা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্ব নেবেন।” দলের এক সূত্রের মতে, এক সময় ঠিক ছিল, কর্মাধ্যক্ষদের নাম চূড়ান্ত করবে জেলা কমিটি। রাজ্যের কাছে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অবশ্য কর্মাধ্যক্ষের পদগুলোতে নাম চূড়ান্ত করার ঝুঁকি নিতে চান না জেলা নেতৃত্ব। রাজ্য কমিটির উপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গান বাজছে। দৌড় চলছে। চেয়ার কিন্তু সীমিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy