Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তামাক বর্জনে রাজ্যের নির্দেশ অঙ্গনওয়াড়িকে

তামাকে বিপদের শেষ নেই। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বরে গিয়েও অনেক অভিভাবক ধূমপান করেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শুধু প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ ধূমপানেও বিপদ রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০২:৩১
Share: Save:

শুধু প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ ধূমপানেও রয়েছে বিপদ। তাই এ বার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বরকে তামাক-বর্জিত করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে ডিসপ্লে বোর্ড লাগাতে হবে। যেখানে লেখা থাকবে, ‘নো-স্মোকিং’। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসা বিপুল সংখ্যক মা-শিশুকে সুস্থ রাখতেই রাজ্যের ওই নির্দেশ বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিপিও অসিত মণ্ডল মানছেন, “রাজ্য কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে। কী করতে হবে জানিয়েছে। ওই নির্দেশিকা মতোই জেলায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

তামাকে বিপদের শেষ নেই। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বরে গিয়েও অনেক অভিভাবক ধূমপান করেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শুধু প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ ধূমপানেও বিপদ রয়েছে। পরোক্ষ ধূমপান অধূমপায়ী যুবক থেকে শিশু- সকলেরই ক্ষতি করে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের তামাকজনিত রোগসমূহের নোডাল অফিসার তথা জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানের কথায়, “এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাজ্যের ১৩-১৫ বছর বয়সী পড়ুয়াদের ৪.৪ শতাংশ ধূমপান করে। এ দেশে তামাক সেবনের গড় যেখানে ৩৫ শতাংশ, সেখানে এ রাজ্যে গড় ৩৬ শতাংশ।”

রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “প্রতিটি সিগারেট মানুষের আয়ু ১১ মিনিট করে কমিয়ে দেয়। জেলায় এই সব দিকগুলো নিয়ে সচেতনতা প্রচার শুরুও হয়েছে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও মানছেন, “তামাক নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো খুব জরুরি।”

ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরেই ৮,৭২০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে নিজস্ব ভবন রয়েছে ৬,১৯২টির।

দুই জেলার ওই সংখ্যক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসা প্রসূতি এবং শিশুর সংখ্যা ৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯২২। রাজ্যের নির্দেশ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চত্বরে কোনও রকম তামাকজাত বস্তুর ব্যবহার হবে না। এটা কেন্দ্রের কর্মী- সহায়িকাদের জানিয়ে দিতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে ডিসপ্লে বোর্ড লাগাতে হবে।

পশ্চিম মেদিনীপুরে দিনে দিনে তামাকের ব্যবহার বাড়ছে। ‘জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট’ সংশোধন করে অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে নেশার বস্তু বিক্রির সাজার মেয়াদ তিন বছর থেকে বাড়িয়ে সাত বছর করা হয়েছে। অবশ্য, প্রায় সর্বত্র সেই আইন রয়েছে খাতায়- কলমে।

তা কার্যকর করার কোনও উদ্যোগ নেই। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথবাবু বলছেন, “তামাক ব্যবহারের ফলে মানব শরীরের ক্ষতি হয় না, এমন কোনও অঙ্গের উল্লেখ করা মুশকিল। হৃদরোগের মতো ভয়ানক ব্যাধিরও জন্ম দেয়।”

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোয় মূলত এলাকার কচিকাঁচা ও গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টিকর খাবার ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “রাজ্যের এই নির্দেশ সর্বত্র কার্যকর হলে শৈশবই সুরক্ষিত হবে। না- হলে তামাক অনেক কিছুই শেষ করে দিতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anganwadi Tobacco অঙ্গনওয়াড়ি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE