বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান।
তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আনিসুর রহমান। গেরুয়া শিবিরে যোগদানের পর একমাস যেতে না যেতেই এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে আনিসুরকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আনিসুরের গ্রেফতারির ঘটনায় প্রতিহিংসার অভিযোগে সরব জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। আজ, মঙ্গলবার পাঁশকুড়া পিডব্লুডি ময়দানে দলের সভা থেকে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী-সহ নেতৃত্ব কোনও বার্তা দেন কি না, সেদিকেই চোখ সকলের।
সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের পাঁশকুড়া জোনাল সম্পাদক পদে থাকাকালীন আনিসুরের বিরুদ্ধে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে তৎকালীন সিপিএম নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল। এরপরেই দলবিরোধী কাজের অভিযোগে আনিসুরকে বহিষ্কার করেন সিপিএম নেতৃত্ব। এরপর ২০০৬ সালের শেষদিকে তৃণমূলে যোগ দেন আনিসুর। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমিরক্ষা আন্দোলন পর্বে প্রচারের আলোয় আসেন তিনি।
তবে বিতর্ক আনিসুরের পিছু ছাড়েনি। ২০১২ সালে পাঁশকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। তবে পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে তাঁকে পূর্ত বিভাগের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি পদ পেলেও পরে তা হারান তিনি। মাস কয়েক আগে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে পাঁশকুড়া পুরসভার পুরপ্রধান হওয়ায় দল তাঁকে সাসপেন্ড করে। পুর দফতরের নির্দেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে পুরপ্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হয় তাঁকে। এই নিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এখনও মামলা বিচারাধীন।
রবিবার গভীর রাতে তমলুকের বাসিন্দা এক তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে এক নার্সিংহোম থেকে আনিসুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ, মঙ্গলবারই পাঁশকুড়ায় তৃণমূলের সভায় শুভেন্দু-সহ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভূঁইয়ার উপস্থিত থাকার কথা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পাঁশকুড়ার সভা অন্য মাত্রা পেতে চলেছে বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
সদ্য দলে যোগ দেওয়া আনিসুরের গ্রেফতারে অস্বস্তিতে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। দলের তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘কী কারণে আনিসুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে দলীয়ভাবে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরেই এ রাজ্যে মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। যারা তৃণমূলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, পুলিশকে দিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এটাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ঘটনা।’’ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র। তিনি বলছেন, ‘‘একজন নির্যাতিত মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কোনও সম্পর্ক নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy