বিপজ্জনক: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বহির্বিভাগের সামনে খোলা সুইচ বক্স। নিজস্ব চিত্র
মাসখানেক আগের ঘটনা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের জরুরি বিভাগ। অন্য দিনের মতো সেদিন সকালেও রোগীদের ভিড়। হঠাৎ জরুরি বিভাগের একটি ঘরে আগুন লেগে যায়। ছোটাছুটি শুরু হয় রোগীদের। একটি পাখা পুড়ে যায়। ওই ঘরে যে ফায়ার অ্যালার্ম ছিল না তা নয়। তবে তা বাজেনি। যে ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছিল, তা-ও কাজে লাগানো যায়নি। দমকল জানিয়েছিল, শর্টসার্কিট থেকেই পাখায় আগুন লেগেছিল। তবে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোয়।
কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ অগ্নিকাণ্ডের পর প্রশ্ন উঠেছে, কী হাল জেলার হাসপাতালগুলির? এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি
আছে কি?
ইতিউতি বিপজ্জনকভাবে বিদ্যুতের তার ঝুলছে। কোথাও খোলা মিটার বক্স রয়েছে। হাত লাগালেই বিপদ। আগুন লাগলে দমকলের জন্য ‘অসহায়’ অপেক্ষা ছাড়া করার গতি নেই। হাসপাতালগুলোয় একটু ঘুরলেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার ‘হাঁড়ির হাল’ চোখে পড়বে। যেন জতুগৃহ! মেডিক্যালে আগেও বেশ কয়েকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তা-ও হুঁশ ফেরেনি। হাসপাতাল চত্বরের এদিকে- সেদিকে দাহ্যবস্তু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। বেসমেন্টগুলোর হালও একই। ইতিউতি আবর্জনা পড়ে থাকে। দাহ্যবস্তুতে যে কোনও সময় আগুন লাগতে পারে। আমরি-কাণ্ডের পর এক দফায় নড়াচড়া শুরু হয়েছিল। তারপর সব ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছি না। দ্রুত পাইপ লাইনের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। আমরা সতর্ক আছি। তাই সব ধরনের পদক্ষেপই করা হচ্ছে।” হাসপাতালের আশ্বাস, পুরনো ‘ওয়্যারিং’ মেরামত করা হবে।
ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের পুরনো ভবনে সিঁড়ির পাশাপাশি র্যাম্প রয়েছে। ফলে আপত্কালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে রোগীদের চাকা লাগানো বেড সমেত হাসপাতাল থেকে বার করে নিয়ে আসা যায়। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি, নয়াগ্রাম ও গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে কোনও র্যাম্পের ব্যবস্থা নেই। সুপার স্পেশ্যালিটিগুলোতে স্মোক ডিটেক্টর, স্মোক অ্যান্ড ফায়ার অ্যালার্ম রয়েছে। গোটা ভবনে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার আছে। আগুন নেভানোর গ্যাস সিলিন্ডারও রয়েছে। তবে পাশাপাশি আগুন ছড়িয়ে পড়ার উপকরণও মজুত রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের পুরনো ভবনে এতদিন অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা ছিল না। এখন কাজ চলছে। আশি শতাংশ কাজ হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার প্রসূন ঘোষ বলেন, “সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনে অগ্নিনির্বাপণের স্বয়ংক্রিয় যথাযথ ব্যবস্থা রয়েছে। জেলা হাসপাতালের পুরনো ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার আশি শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। সুপার স্পেশ্যালিটির বহুতলে র্যাম্প নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।”
ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা মোটের উপর ঠিকই রয়েছে। তবে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের ভবনে ঘাটতি রয়েছে পরিকাঠামোর। অগ্নিনির্বাপণের প্রায় ষাট শতাংশ কাজ বাকি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy