Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘মরে যাব, মোমো ডাকছে’, মাঝরাতে দরজা খুলে দৌড় যুবকের

ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ২ ব্লকের তুরকা। কালাচাঁদ দাস নামে ওই যুবককে নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবার। বুধবার পুলিশে জানানোর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শও নিয়েছেন তাঁর পরিজনেরা। কালাচাঁদ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। জানা গিয়েছে, তুরকা বাজারে এক বন্ধুর মোবাইল দোকানে আড্ডা দিতে যেতেন কালাচাঁদ। 

কালাচাঁদ দাস। নিজস্ব চিত্র

কালাচাঁদ দাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁতন শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

মোমো খেলার চক্করেই নাকি মাঝরাতে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল ছেলে— পুলিশে এমনই অভিযোগ করেছেন বাবা-মা। তদন্তে নেমে বছর পঁচিশের ওই যুবকের ডায়েরির পাতায় লেখা সুইসাইড নোট পেয়েছে পুলিশ। সেখানেও রয়েছে মোমো গেমের কথা।

ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ২ ব্লকের তুরকা। কালাচাঁদ দাস নামে ওই যুবককে নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবার। বুধবার পুলিশে জানানোর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শও নিয়েছেন তাঁর পরিজনেরা। কালাচাঁদ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। জানা গিয়েছে, তুরকা বাজারে এক বন্ধুর মোবাইল দোকানে আড্ডা দিতে যেতেন কালাচাঁদ।

পরিবার সূত্রে খবর, গত রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ জেঠুর ছেলে অরবিন্দ দাসকে ফোন করেছিলেন কালাচাঁদ। অরবিন্দ বলেন, ‘‘ভাই ফোন করে বলে, ‘আমার বাঁচার ইচ্ছে নেই। ইহজগতে নয়, আমাকে পরজগতে ডাকছে। আমি সেখানে চললাম।’ এই বলে ফোন কেটে দেওয়ায় আমি ফের ফোন করি। কিন্তু ফোন ধরেনি কালাচাঁদ।’’ অরবিন্দ তখন বাড়িতে খবর দেন। বাড়ির লোকজন উঠে দেখেন, কালাচাঁদ ঘরের দরজা খুলে বাইরের দিকে ছুটছেন। ওই যুবকের বাবা কানাই দাস জানান, সেই সময় কালাচাঁদকে আটকাতে গেলে তিনি বলেন— ‘আমাকে ছেড়ে দাও, আমি মরে যাব। আমাকে মোমো ডাকছে।’

পরিজনেদের দাবি, অনেক কষ্টে আটকানো হয় ওই যুবককে। সেই সময় তাঁর পকেটে একটি দড়িও পাওয়া যায়। ছেলেকে বাঁচাতে মোবাইলটি ভেঙে পুকুরে ফেলে দেন কানাই। পরে অবশ্য কালাচাঁদের ডায়েরি ঘেঁটে মেলে সুইসাইড নোট। একটি পাতায় লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। মোমো অ্যাপসে চোখের দৃষ্টি পড়লেই মরে।’

এমনিতে কালাচাঁদ কথা কম বলেন, স্বভাবও চাপা। তবে ওই ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলেই দাবি পরিজনেদের। কানাই বলছিলেন, ‘‘সেই রাত থেকেই ছেলে বদলে গিয়েছে। কেমন গুম হয়ে বসে আছে। কারও সঙ্গে কথা বলছে না। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’’ গ্রামবাসী আবেদ বক্সও বলেন, ‘‘ছেলেটির মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করছি। এই ধরনের মারণ গেম বন্ধ হওয়া উচিত।’’ গ্রামবাসী আবেদ বক্সও বলেন, ‘‘ছেলেটির মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করছি। এই ধরনের মারণ গেম বন্ধ হওয়া উচিত।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মোবাইলে মোমো মেসেজ আসার দাবি করেছে জেলার নারায়ণগড়ের এক ছাত্রও। ইমাম পাটনা গ্রামের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নরোত্তম দোলাইয়ের দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে মোমোর মেসেজ আসে। হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়, একটি লিঙ্কও পাঠানো হয়। নরোত্তমের কথায়, ‘‘মেসেজ করে অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আমার ছবি পাঠাতে বলেছিল। ভয় পেয়ে এক শিক্ষককে সব জানাই।’’ ওই শিক্ষক সন্তু মান্না বলেন, ‘‘ওকে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suicide Attempt Momo Suicide Game Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE