Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

চৈত্র শেষের বাসন্তী আরাধনা কাঁথিতে

আকাশে দাপট দেখাচ্ছে সূর্য। গরমে প্রাণান্তকর অবস্থা। সঙ্গে ভোটের গরমও রয়েছে। তবে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ কী আর এতে থেমে থাকে? তাই চৈত্রের গরম উপেক্ষা করেই বাঙালির বারোমাসের তেরো পার্বণের বাসন্তী পুজো নিয়ে মেতে উঠেছে কাঁথির মানুষজন। সর্বজনীন ও পারিবারিক ভাবে পূজিত হন দেবীদূর্গা।

সুব্রত গুহ
কাঁথি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৬ ০০:৪৫
Share: Save:

আকাশে দাপট দেখাচ্ছে সূর্য। গরমে প্রাণান্তকর অবস্থা। সঙ্গে ভোটের গরমও রয়েছে। তবে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ কী আর এতে থেমে থাকে? তাই চৈত্রের গরম উপেক্ষা করেই বাঙালির বারোমাসের তেরো পার্বণের বাসন্তী পুজো নিয়ে মেতে উঠেছে কাঁথির মানুষজন।

সর্বজনীন ও পারিবারিক ভাবে পূজিত হন দেবীদূর্গা। কোথাও কোথাও মা অন্নপূর্ণা হিসেবেও পূজিত হন। কাঁথি মহকুমার মধ্যে কাঁথি-৩ ব্লকের দইসাই বেঙ্গল ক্লাব, দিঘার কাশীপুর কলিকাতা প্রবাসী সঙ্ঘ ও খেজুরির দেউলপোতা গ্রাম্যগোষ্ঠীর পরিচালনায় শুরু হয়েছে বাসন্তী পুজো ও গ্রামীণ মেলা। দেউলপোতা গ্রাম্যগোষ্ঠীর পরিচালনায় মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বাসন্তী মেলা ও সংহতি উৎসব। এই বছরেই ৪৩ বছরে পা রাখল দেউলপোতা গ্রাম্যগোষ্ঠীর বাসন্তী আরাধনা।

বাসন্তী পুজো উপলক্ষে শুরু হয়েছে আটদিনব্যাপী বাসন্তী মেলা ও সংহতি উৎসব। গ্রাম্যগোষ্ঠীর সম্পাদক তনুজ বেরা জানালেন, “আটদিব্যাপী মেলা ও উৎসব উপলক্ষে ব্যবস্থা করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানের। সুদৃশ্য ও দৃষ্টিনন্দন বাসন্তী মাতৃ প্রতিমা ছাড়াও নয়নাভিরাম ও কারুকার্যময় মণ্ডপ, চন্দননগরের আলো, চলমান বারোয়ারি, নাগরদোলা, মরণকুঁয়া চিলড্রেন পার্ক, সবুজায়ন ছাড়াও থাকছে বইমেলা, ড্যান্সিং ফোয়ারা আরও অনেক কিছু। সংহতি উৎসবের অঙ্গ হিসেবে থাকছে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য, ম্যাজিক শো, টলিউডের শিল্পী সমন্বয়ে অর্কেষ্ট্রা থেকে যাত্রানুষ্ঠানের আয়োজন।

দেউলপোতা সহ স্থানীয় দশ-পনেরটি গ্রামের মানুষ গ্রাম্যগোষ্ঠীর সর্বজনীন বাসন্তী পূজো ও মেলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকেন বলেও ক্লাব সদস্যরা জানান। কাঁথি-৩ ব্লকের দইসাই বেঙ্গল ক্লাবের উদ্যোগেও প্রায় বছর চল্লিশেক ধরে চলে আসছে বাসন্তী পুজো। বেঙ্গল ক্লাব সদস্যরা জানান, শারদীয়া দুর্গাপুজোর সময় স্থানীয় কিছু মানুষ কর্মসূত্রে বাইরে থাকার জন্য শারদীয়া উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন না। তাদের কথা চিন্তা করেই বছর চল্লিশেক আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গ্রামে বাসন্তী পুজো করা হবে। এরপরই স্থানীয়দের উদ্যোগে শুরু হয় বাসন্তী পুজো।

১৯৯২ সালে দইসাই বেঙ্গল ক্লাব গঠন হওয়ার পর থেকে বেঙ্গল ক্লাবের সদস্যরাই গ্রামবাসীদের সহায়তায় বাসন্তী পুজো করে আসছে। পুজোকে কেন্দ্র করে বসে গ্রামীণ মেলা। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই মেলা জমে উঠে নানা সম্ভারের বিকিকিনিতে। ছোটদের খেলনা থেকে গৃহস্থালীর জিনিসপত্র, স্থানীয় গ্রামগুলিতে উৎপন্ন কৃষি সামগ্রী থেকে হস্তশিল্পের নানান জিনিসপত্র। নবমীর দিন গ্রামবাসী ও দর্শনার্থীদের মায়ের প্রসাদও বিতরণ করা হয়।

আটদিনব্যাপী বাসন্তী পুজো উপলক্ষে বেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচিও নেওয়া হয়। আয়োজন হয় অনুষ্ঠানের। প্রকাশ করা হয় স্মরণিকা। বাসন্তী পুজো উপলক্ষে ভোট পর্বের মাঝেও রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে গ্রামের মানুষ মেতে উঠেন সপ্তাহব্যাপী উৎসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Basanti Puja Contai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE