নাটক: শৌচাগার সচেতনতা অনুষ্ঠানে খুদেরা। নিজস্ব চিত্র
সাত সকালে প্রকৃতির ডাকে সা়ড়া দিতে জঙ্গলের দিকে হাঁটা লাগিয়েছিলেন মধুসূদন মল্লিক, জগৎপতি ভুক্তারা। ঠিক সেই সময়ই কোথা থেকে হাজির হলেন বিডিও। বলে বসলেন, ‘‘এমনটা আর চলবে না। জঙ্গলে বা মাঠে নয়। মলত্যাগ করুন শৌচাগারে।’’
বুধবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের লোধাশুলি পঞ্চায়েতের ডালকাটি গ্রামে ‘দুয়ারে প্রশাসন’ কর্মসূচি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বিডিও সুদর্শন চৌধুরী। সঙ্গী অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের ঝাড়গ্রাম ব্লক আধিকারিক পল্লবী দত্ত, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রেখা সরেন, পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী মাহাতো ও ব্লক, পঞ্চায়েত স্তরের কর্মীরা। গ্রামের মানুষকে তাঁরা বোঝানোর চেষ্টা করেন খোলা জায়গায় মলত্যাগ করলে কী কী অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু গ্রামবাসীরা অনেকেই বলে বসেন, বদ্ধ ঘরে মলত্যাগ করতে তাঁরা পারেন না। অভ্যাস নেই।
সমস্যা শুধু এটুকু নয়। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে সরকার দশ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে শৌচাগার তৈরি করে দেয়। তবে এ জন্য উপভোক্তাকে ন’শো টাকা দিতে হয়। কিন্তু ডালকাটি গ্রামে অনেক পরিবারই সেটুকু খরচও বহন করতে পারে না। লোধা-শবর ও আদিবাসী অধ্যুষিত ডালকাটি গ্রামে চারশো পরিবারের বাস। জনসংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। সরকারি প্রকল্পে কিছু বাসিন্দার বাড়িতে শৌচাগার হয়েছে। তাও তাঁরা মাঠে-জঙ্গলে যান। সুদর্শনবাবু বলেন, ‘‘এই গ্রামে সকলের ন’শো টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাই আমরা ‘কমিউনিটি টয়লেট’ তৈরি করে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ স্থানীয়দের নিয়ে বৈঠকও করেন তিনি।
পরে স্থানীয় শিশুদের নিয়ে একটি পদযাত্রা হয়। ফুটবল মাঠে প্রশাসনের উদ্যোগে একটি সচেতনতা শিবির হয়। সেখানে যোগ দেন জেলাশাসক আর অর্জুন। ওই শিবিরে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প নিয়ে সচেতনতামূলক গান শোনান লোকশিল্পীরা। বাঁশতলা জুনিয়র হাইস্কুলের আদিবাসী পড়ুয়ারা পরিবেশন করে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা মূলক নাটক ‘মানুষ ভূত’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy