Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মেডিক্যাল চত্বর ফাঁকা

ইতিমধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ২৬ জন চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন।

রবিবারের মেদিনীপুর মেডিক্যাল চত্বর। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

রবিবারের মেদিনীপুর মেডিক্যাল চত্বর। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

এটা মেদিনীপুর মেডিক্যাল না কি কোনও বেসরকারি হাসপাতাল? রবিবাসরীয় ক্যাম্পাসের ছবিটা দেখে খটকা লাগতেই পারে। অন্য সময়ে মেডিক্যাল চত্বরে পা রাখার উপায় থাকে না। যে চত্বর বেশিরভাগ সময়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকে এখন সেটিই বেশিরভাগ সময়ে কার্যত শুনশান থাকছে।

এনআরএসে জুনিয়র ডাক্তার নিগ্রহের ঘটনায় সারা রাজ্যে জুড়েই কর্মবিরতি চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবাও। গত কয়েকদিনের মতো রবিবারও কাজ বন্ধ রেখে কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছিলেন মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তাররা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেই বিক্ষোভ করেন তাঁরা। ইতিমধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ২৬ জন চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন। তবে মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, ‘‘এ ভাবে গণ- ইস্তফা দেওয়া যায় না। যাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন, তাঁদের প্রায় সকলেই কাজ করছেন।’’ তিনি জানান, সিনিয়র চিকিৎসকেরা কাজ করছেন। হাসপাতালের সমস্ত বিভাগেই পরিষেবা সচল রাখার সব রকম চেষ্টা চলছে।

রবিবারে বহির্বিভাগ বন্ধ থাকে। তাই অন্যান্য দিনের তুলনায় এ দিন হাসপাতালে আসা মানুষের সংখ্যা এমনিই কম থাকে। এ দিন তার থেকেও কম ছিল। এ দিন অবশ্য জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ খোলা ছিল। তবে গত কয়েকদিনের মতো এ দিনও কিছু অন্তর্বিভাগে পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। হাসপাতালের এক কর্মী বলছিলেন, ‘‘মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে সপ্তাহ কয়েক আগেও ১৫০- ১৬০ জন রোগী ভর্তি থাকতেন। যদিও এখানে ৬০টি শয্যা রয়েছে। শয্যা না পেয়ে অনেকে মেঝেতে, বারান্দায় থাকতেন। এখন ৪০ জন রোগী রয়েছেন। অনেক শয্যাই ফাঁকা।’’

রোগী কমছে শিশু ওয়ার্ডেও। মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, শিশু ওয়ার্ডে ৯০টি শয্যা রয়েছে। সেখানে গড়ে ১১৫- ১২০ জন শিশু ভর্তি থাকে। রবিবার সেখানে ৪০ জন শিশু ভর্তি ছিল। মেডিক্যালে এসএনসিইউ রয়েছে। এখানে ১০৬টি শিশুর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ২৮ দিন বয়স পর্যন্ত শিশুদের এখানে রাখা হয়। বয়স এর বেশি হলে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়। এসএনসিইউয়ে অবশ্য ১০৬টি শিশুই রয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু মানছেন, ‘‘গত কয়েকদিনে বিভিন্ন ওয়ার্ডেই রোগীর সংখ্যা কমেছে। শিশু ওয়ার্ডেও রোগী কমেছে।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের শিশু- চিকিৎসক তথা আইএমএ-এর মেদিনীপুর শাখার সভাপতি তারাপদ ঘোষও মানছেন, ‘‘এই সময়ের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাও খানিক কমেছে।’’ হাসপাতালের এক আধিকারিকের মতে, ভর্তি থাকা রোগীরা সুস্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। নতুন রোগীরা আর সেই ভাবে হাসপাতালে এসে ভর্তি হচ্ছেন না। চিকিৎসকদের একাংশ মানছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেকে বেসরকারি হাসপাতালে চলে যাচ্ছে।

এ দিনও অবস্থান থেকে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা দাবি করেছেন, এসএসকেএমে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে ‘হুমকি’ দিয়েছেন, সে জন্য ক্ষমা চেয়ে তাঁকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। না- হলে কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE