বৃহস্পতিবার জয়ের আঁচ পেয়েই রমাদেবীকে নিয়ে উল্লাস অনুগামীদের। ফাইল চিত্র
বৃহস্পতিবার ভোট গণনায় প্রাথমিক হিসেবে তৃণমূল প্রার্থীর চেয়ে ৫৭ ভোটে এগিয়ে ছিলেন নন্দকুমার ব্লকের ব্যবত্তারহাট পশ্চিম গ্রামপঞ্চায়েতের নির্দল প্রার্থী রমা পট্টনায়েক। গণনার একেবারে শেষদিকে এমন খবরে জয় হাতের মুঠোয় এসে গিয়েছে দেখে রমাদেবীর অনুগামীরা বিডিও অফিসের কিছুদূরে আবির মেখে জয়োল্লাসে মেতে ওঠেন। কিন্তু ভোট গণনা শেষ হয়ে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে ফের পুনর্গণনার দাবি তুলে বিডিওর দ্বারস্থ হন শাসক তৃণমূলের প্রার্থী-সহ নেতা-কর্মীরা। আর তারপরেই রমাদেবীকে দীর্ঘক্ষণ বিডিও অফিসে অপেক্ষা করানোর পর রাতে জানানো হয় তিনি হেরে গিয়েছেন। বিজয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সংঘমিত্রা রায়।
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন রমাদেবীর অনুগামীরা। রাতেই তমলুকের মহকুমা শাসকের কাছে ফোনে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। তবে মহকুমা শাসকের আশ্বাস পেলেও শেষ পর্যন্ত ‘বিজয়ী’র শংসাপত্র হাতে পাননি রমাদেবী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বৃহস্পতিবার ভোটগণনা কেন্দ্রে ব্যালট পেপারের হিসেবে দেখা যায় তৃণমূল প্রার্থীর চেয়ে আমি ৫৭ ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেছি। কিন্তু এরপরেই আমাকে জয়ের শংসাপত্র দেওয়া নিয়ে টালবাহনা শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে বিডিও অফিসে অপেক্ষা করার জানানো হয় যে, আমি পরাজিত হয়েছি।’’
শুধু রমাদেবী নন, নন্দকুমার ব্লকের কুমারআড়া গ্রামে বিজেপি প্রার্থী বুলারানি মান্না ভোট গণনায় তৃণমূলের চেয়ে ২টি ভোটে ‘জয়ী’ হলেও শেষপর্যন্ত তাঁকেও শংসাপত্র দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বিজেপির তমলুক জেলা কমিটির সভাপতি প্রদীপ দাসের অভিযোগ, ‘‘নন্দকুমার ব্লকের ভোটগণনা কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থী জয়ী হওয়ার পরে তাঁদের শংসাপত্র দেওয়া নিয়ে বিডিও টালবাহনা করেছেন। জশনান গ্রামে আমাদের প্রার্থী বুলারানি মান্না জয়ী হলেও তাঁকে শংসাপত্র না দিয়ে তৃণমূল প্রার্থীকে জয়ী হিসেবে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি । তৃণমূলের চাপেই এটা করা হয়েছে।’’
এমন অভিযোগ নিয়ে নন্দকুমারের বিডিও মহম্মদ আবু তায়েব বলেন, ‘‘কয়েকটি আসনে ভোট পুনর্গণনার পর কিছু ক্ষেত্রে আগের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে। তাই জয়ী হওয়ার পর শংসাপত্র না দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’’
তমলুকের মহকুমা শাসক শুভ্রজ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কাছে একটা অভিযোগ এসেছিল। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী আমি বিডিও’কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম।’’
নন্দকুমারের বিধায়ক তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুমার দে অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কয়েকটি আসনে খুব কম ব্যবধান থাকায় আমরা পুনর্গণনার দাবি জানিয়েছিলাম। কয়েকটি ক্ষেত্রে বাতিল ব্যালটও গণনা হয়ে গিয়েছিল। ওই সব আসনে পুনরায় ভোটগণনা হয়েছে। বিরোধী প্রার্থীদের জোর করে হারিয়ে দেওয়া বা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy