Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নির্দেশ ‘অমান্য’, সভাপতিও প্রার্থী!

দলের নির্দেশ থোড়াই কেয়ার! ব্লক সভাপতি হয়েও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি হতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে শাসকদলের অন্দরে।

কেশব মান্না
হলদিয়া শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৩৫
Share: Save:

দলের নির্দেশ থোড়াই কেয়ার! ব্লক সভাপতি হয়েও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি হতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে শাসকদলের অন্দরে।

সম্প্রতি রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছিল, একই সঙ্গে দলের ব্লক সভাপতি এবং পঞ্চায়েতের প্রার্থী হওয়া যাবে না। সেই নির্দেশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে জেলা তৃণমূলের একাংশ। তৃণমূল সূত্রে খবর, বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে দু’এক জন সভাপতি বাদ দিয়ে, পূর্ব মেদিনীপুরের ২৫টি ব্লকের অধিকাংশ সভাপতিই পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। কেউ গ্রাম পঞ্চায়েতে, কেউ পঞ্চায়েত সমিতিতে এবং কয়েক জন ব্লক সভাপতি জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ার দৌড়েও নাম লিখিয়েছেন।

হলদিয়া থেকে তমলুক, কাঁথি, এগরা মহকুমাতেও এসব ঘটনা আকছার। হলদিয়া ব্লকের দেউলপোঁতা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী ব্লক সভাপতি রামচন্দ্র জানা। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানের আসন মহিলার জন্য সংরক্ষিত। তাই অসুবিধা হবে জেনে প্রার্থী হয়েছি।’’ মহিষাদল ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তী। সুতাহাটায় পঞ্চায়েত সমিতির ৫ নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ব্লক সভাপতি অমিয় দাস।

গোটা জেলাতেই প্রায় এক ছবি। তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের দুই আহ্বায়ক উত্তম সাহু এবং শরৎ মেট্যা পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। পাঁশকুড়ার ব্লক সভাপতি দীপ্তিকুমার জানা প্রার্থী গোবিন্দপুর অঞ্চলের একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে। চণ্ডীপুরের সভাপতি অশ্বিনী মাইতিও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী।

বাদ পড়েনি এগরা, পটাশপুর। পটাশপুর– ১ এবং ২ ব্লকের সভাপতি তাপস মাঝি এবং চন্দন সাহু এবার প্রার্থী। কাঁথি-১ ব্লকের সভাপতি মৃন্ময় পণ্ডা, দেশপ্রাণ ব্লকে তরুণ জানা, রামনগর-১ ও ২ নম্বর ব্লকের নিতাই সার এবং অরুণ দাস, খেজুরি-১ এ সত্যরঞ্জন বেরা প্রমুখ ব্লক সভাপতি হলেও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে লড়ছেন।

এভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘কে কার কথা শোনে! ইচ্ছেমত মনোনয়ন জমা দিয়েছে সবাই।’’ কিন্তু দলের নির্দেশ অমান্য কেন? জবাবে রামচন্দ্র জানা বলেন, ‘‘এরকম কোনও নির্দেশ পাইনি।’’ সুতাহাটার ব্লক সভাপতি অমিয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘গত পাঁচ বছরে বেশ কয়েকজন দু’টো দায়িত্বই তো সামলেছেন।’’ এঁদের অন্যতম রামনগর-২ ব্লকের সভাপতি অরুণ দাস বলেন, ‘‘আমি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও ছিলাম। অসুবিধে হয়নি। তা ছাড়া, নির্দেশ নেই, যে একটা পদে থাকলে, অন্যটিতে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে না।’’

জেলা তৃণমূল কোর কমিটির আহ্বায়ক অর্ধেন্দু মাইতি বলেন, ‘‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে সভাপতিরা প্রার্থী হয়েছেন। এতে কোনও অসুবিধে নেই।’’ এ ব্যাপারে জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE