Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সাফাইয়ের এপিঠ-ওপিঠ

শহরের দুই হাসপাতাল। একটি রেলের অধীন। অন্যটি মহকুমা হাসপাতাল। তবে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপন পদ্ধতিতে দুই হাসপাতালের দুই ছবি! 

স্তূপাকার সিরিঞ্জ। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

স্তূপাকার সিরিঞ্জ। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৫
Share: Save:

শহরের দুই হাসপাতাল। একটি রেলের অধীন। অন্যটি মহকুমা হাসপাতাল। তবে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপন পদ্ধতিতে দুই হাসপাতালের দুই ছবি!

পরিচ্ছন্নতার বিচারে খড়্গপুরের রেল হাসপাতাল বরাবরই এগিয়ে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গত কয়েকবছর আগে এখানে গড়ে তোলা হয় বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপন পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ, স্যালাইন বোতল, তুলো-ব্যান্ডেজ, মানবীয় টিস্যু-অঙ্গ, স্যানেটারি ন্যাপকিন-সহ নানা বর্জ্য ওয়ার্ডেই পৃথকভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সেগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য জমার ঘরে। হলদিয়ার একটি সংস্থার সঙ্গে হাসপাতালের চুক্তি আছে। ওই সংস্থার লোকেরাই নির্দিষ্ট ঘর থেকে সংগ্রহ করে বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য। রেলের চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট অচ্যুতানন্দ মণ্ডল বলেন, “আমাদের সাফাইকর্মীরা সারাক্ষণ নজরদারি চালাচ্ছে। রোগীরা কখনও ভুল করলেও সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সতর্ক করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা করে বর্জ্য জমা করার ব্যবস্থা রয়েছে। এভাবেই আমরা হাসপাতাল চত্বর একেবারেই পরিচ্ছন্ন করতে পেরেছি।”

এবার দেখা যাক খ়ড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের ছবিটা কেমন।

হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে রাখা আছে কালো, লাল, নীল ও হলুদ বাক্স। নিয়ম অনুযায়ী, কালো বাক্সে ফলের খোসা, খাবারের উচ্ছিষ্ট জাতীয় বর্জ্য ফেলতে হয়। লাল বাক্সে স্যালাইনের বোতল, সিরিঞ্জ, ক্যাথিটারের মতো বর্জ্য জমা করতে হয়। নীল বাক্সে ওষুধের ভায়েল, কাচের জিনিস ফেলতে হয়। আর হলুদ বাক্সে তুলো-ব্যান্ডেজ, স্যানেটারি ন্যাপকিন, রক্তের খালি ব্যাগ, মানবীয় টিসু-অঙ্গ ফেলার নিয়ম। কিন্তু হাসপাতালে এক চক্কর ঘুরলে দেখা যাবে, প্রসূতি ও মহিলা বিভাগের বাইরের দেওয়াল, কার্নিশ, মাটিতে ছড়িয়ে রয়েছে ব্যবহৃত স্যানেটারি ন্যাপকিন, গজ, তুলোর মতো নানা বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য। জমা হওয়া বর্জ্য নিয়ে গিয়ে ফেলার কথা মর্গের কাছে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য সংরক্ষণের নীল ও হলুদ ঘরে। কিন্তু মর্গের কাছে ওই বর্জ্য সংরক্ষণের ঘরের বাইরে দেখা যায় সাধারণ আবর্জনার সঙ্গে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য স্তুপ হয়ে রয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে শিশুবিভাগে ভর্তি থাকা মেয়েকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন সুভাষপল্লির তৃষা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাব নেই জানি। লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ করে পরিকাঠামো গড়ার পরেও তবে কেন এমন হাল। চারদিকে তো আবর্জনা থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতি হচ্ছে তো ভর্তি থাকা শিশুদের!” অভিযোগ, সচেতনতার অভাব তো রয়েছে পাশাপাশি নজরদারি না থাকায় বাড়ছে সমস্যা। হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার শুভ্রদীপ মাহাতো বলেন, “আসলে এই বিষয়টি তো হাউজ কিপিং সুপারভাইজরের নজরদারি চালানো দরকার। তাঁরা ঠিকভাবে কাজ করছে না বলে এমনটা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।” যদিও হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে যথাযথভাবে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য পৃথক করে রেখে মর্গের কাছে ওই বিশেষ ঘরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হলদিয়ার একটি সংস্থা ওই বর্জ্য নিয়ে যায়। সেখানে বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য বাইরে পড়ে থাকার কথা নয়। আমি বিষয়টি দেখব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Medical Environment Biomedical Waste
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE