Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Gopiballabpur

হারলে ঝুঁটি-কাটা, জিতলে ট্রফি! মকর সংক্রান্তিতে বুলবুলের ডুয়েল

শামিয়ানার উপর একে অন্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে উন্মুখ দু’টি বুলবুল। আশপাশের ভিড় থেকে উঠছে তালি, হুঙ্কার।

সম্মুখ সমরে দুই বুলবুল। নিজস্ব চিত্র

সম্মুখ সমরে দুই বুলবুল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপীবল্লভপুর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ২২:১৮
Share: Save:

খিদে পেটে জমে উঠেছে ল়ড়াই। যুদ্ধে হারলে কাটা যাবে ঝুঁটি। জিতলে মিলবে ট্রফি। আর পাঁচটা প্রতিযোগিতার মতোই ব্যবস্থা ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরে— বুলবুল পাখির লড়াই। মকর সংক্রান্তির দিন এলাকার মূল আকর্ষণ দুই বুলবুলের ডুয়েল।

শামিয়ানার উপর একে অন্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে উন্মুখ দু’টি বুলবুল। আশপাশের ভিড় থেকে উঠছে তালি, হুঙ্কার। মকর সংক্রান্তের সকালে গোপীবল্লভপুরের এই চিত্র পরিচিত দৃশ্য। প্রতি বছর এই দিনটিতে গোবিন্দজিউ-এর মন্দিরের সামনে চলে এমন প্রতিযোগিতা। বাজারসাই এবং দক্ষিণসাই, এই দুই এলাকার মধ্যে পাখির লড়াই ৪০০ বছরেরও বেশি পুরনো বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

লড়াই এক দিন হলেও, তার প্রস্তুতি চলে প্রায় দু’মাস ধরে। পাখি ধরে তাকে বেঁধে রেখে দেওয়া হয় প্রশিক্ষণ। খেলার নিয়মও বিচিত্র। সকাল থেকে না খাইয়ে রাখা হয় দু’টি বুলবুলকেই। খেলার মঞ্চে রাখা হয় কলার টুকরো। সেই কলা খেতেই সম্মুখ সমরে নামে দুই পাখি।

আরও পড়ুন: ‘বেআক্কেল’ শীত, ক্ষীণ রসের ধারা, বাজারে কম পড়েছে সোনালি নলেন

আরও পড়ুন: ছড়াচ্ছে বার্ড ফ্লু, সারা দেশের পাশাপাশি সতর্ক পশ্চিমবঙ্গও

যুদ্ধে যে পাড়ার বুলবুল জেতে তাদের দেওয়া হয় ট্রফি। আর যে পাখি হেরে যায় তার ঝুঁটি কেটে উড়িয়ে দেওয়া হয়। জয়ী পাখিকে কিছু দিন রেখে, খাইয়ে দাইয়ে তোয়াজ করে ছেড়ে দেওয়া হয় জঙ্গলে। এমন বিচিত্র অনুষ্ঠান দেখতে সূদূর ঝাড়খণ্ড এবং ও়ড়িশা থেকেও আসেন অনেকে। বৃহস্পতিবারের ল়ড়াইয়ে দক্ষিণসাই পাড়াকে হারিয়ে দেয় বাজারসাই পাড়া। এ নিয়ে উচ্ছ্বাস এলাকায়।

গোপীবল্লভপুরের এই প্রথা নিয়ে পক্ষীপ্রেমী জয়ন্ত মান্না বলছেন, ‘‘কাক ছাড়া যে কোনও পাখি ধরাই এখন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এখনও জাল্লিকাট্টু, মুরগির লড়াই বা শিকার উৎসব চলছে। প্রকৃতিগত ভাবে বুলবুল কিছুটা আক্রমণাত্মক স্বভাবের। দীর্ঘ ক্ষণ না খাইয়ে রাখার ফলে এদের আক্রমণারত্মক হয়ে ওঠে। ফলে এরা মারপিট করতে গিয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এ নিয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে। এক দিনে এই প্রথা দূর হবে না। এ জন্য দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হবে। আশা করি দু’তিন বছরের মধ্যেই ফল পাওয়া যাবে। আমরা শিকার উৎসবের ক্ষেত্রেও প্রচারের অনেকটা সুফল পেয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gopiballabpur Makar Sankranti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE