Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পদ্ম বলেই দুয়োরানি!

বিজেপির দাবি, নয়াগ্রাম ব্লকে তাদের ক্ষমতাসীন বালিগেড়িয়া ও আড়রা পঞ্চায়েতের সরকারি প্রকল্পে গরিব মানুষদের জন্য বরাদ্দ হওয়া বাড়ির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সরকারি বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে নয়াগ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলল বিজেপি। প্রতীকী চিত্র

সরকারি বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে নয়াগ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলল বিজেপি। প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াগ্রাম শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা-তোমরা বিভাজন না করার জন্য শাসকদলকে পরামর্শ দিয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। তারপরেও উন্নয়নে দলবাজির অভিযোগ কমছে না। সরকারি বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলল বিজেপি।
বিজেপির দাবি, নয়াগ্রাম ব্লকে তাদের ক্ষমতাসীন বালিগেড়িয়া ও আড়রা পঞ্চায়েতের সরকারি প্রকল্পে গরিব মানুষদের জন্য বরাদ্দ হওয়া বাড়ির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে নয়াগ্রাম ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ওই দু’টি পঞ্চায়েত দখল করেছিল পদ্ম শিবির। বাকি ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গড়ে তৃণমূল।

প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ১৬ অগস্ট ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের এক বৈঠকে জেলার ৭৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করা হবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলাশাসকের স্বাক্ষরিত জেলা পরিষদের সরকারি তালিকা অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বালিগেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩২৭টি ও আড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৯৭টি নতুন বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। কিন্তু তারপর পঞ্চায়েত সমিতির বৈঠকে ওই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জন্য বরাদ্দ হওয়া বাড়ির সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বালিগেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুস্মিতা প্রধান এবং আড়রা পঞ্চায়েতের প্রধান প্রধান সরেন জানান, তাঁরা বুধবার ব্লক অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, নতুন তালিকায় ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বালিগেড়িয়া পঞ্চায়েতের জন্য মাত্র ৯৭ ও আড়রা পঞ্চায়েতের জন্য ৯৮টি বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। বিজেপি পরিচালিত দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা কম সংখ্যক বাড়ির বরাদ্দ নেবেন না। এ ব্যাপারে পঞ্চায়েতের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতিকে জানিয়ে দেওয়া হবে। বিজেপি-র নয়াগ্রাম মণ্ডল সভাপতি উৎপল দাস মহাপাত্রের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের ক্ষমতাসীন নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি উন্নয়ন নিয়ে চূড়ান্ত রাজনীতি করছে। কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্যে ওই সব বাড়ি দেওয়া হয়। গরিব মানুষকে বঞ্চিত করা হলে আমরাও ছেড়ে কথা বলব না।’’

কোটা কমানোর বিষয়টি মানলেও তাতে রাজনীতির যোগ নেই বলেই দাবি করছেন তৃণমূল পরিচালিত নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্চিতা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আরও গরিব মানুষকে বাড়ি দেওয়ার জন্যই ওই দু’টি পঞ্চায়েতের কোটা কমিয়ে অন্য পঞ্চায়েতে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েই এই পরিবর্তন করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’ সঞ্চিতার দাবি, গত বার ওই দু’টি পঞ্চায়েতে বেশি বাড়ি বরাদ্দ হয়েছিল। তাই এবার কোটা কমানো হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাড়ির কোটা কমানোর কোনও খবর আমার জানা নেই। এ রকম কোনও সিদ্ধান্তও হয়েছে বলেও শুনিনি।’’

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের বলেন, ‘‘কোটা বাড়ানো ও কমানোর এক্তিয়ার পঞ্চায়েত সমিতির রয়েছে। তফশিলি জাতি ও উপজাতির অনুপাত দেখে এগুলি করা হয়।’’ কিন্তু জেলা পরিষদ থেকে যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে কত সংখ্যক এসসি, এসটি, সংখ্যালঘু ও অন্যান্যরা কতগুলি বাড়ি পাবেন, সেই ভাগও করে তো দেওয়া হয়েছিল। তারপরও আবার নতুন করে কোটা কমানোর প্রয়োজন কেন পড়ল? সদুত্তর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Nayagram TMC TMC panchayat samiti
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE